সুবিপ্রবির প্রক্টর-শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, সড়ক অবরোধ
হাফ পাস (অর্ধেক ভাড়া) ইস্যুকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে বাস হেলপারের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের সামনে প্রায় আধঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় সড়কের উভয়পাশে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। পরে সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মালিক পরিবহনের নেতা মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিলে পরিবেশ শান্ত হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, পুরো সপ্তাহ, ২৪ ঘণ্টা হাফপাস নিশ্চিত করতে হবে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাসের হেলপারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে সবার সামনে ক্ষমা চাইতে হবে। সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মার্জিত ব্যবহার করতে হবে। প্রতিটি বাসে হাফপাস লিফলেট লাগাতে হবে। শিক্ষার্থী সংখ্যা একজন হলেও বাস দাড়াতে ও হাফপাস নিতে হবে।
অবরোধ তুলে নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুল লতিফ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ, সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মালিক পরিবহনের নেতা মিজানুর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আল নাহিয়ান নূর বলেন, ‘বাসের হেলপাররা আমাদের সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করে। আজ আমাদের সামনে আমাদের প্রক্টর স্যারের সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। হাফ ভাড়া নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য টানা হিঁচড়ে করলে আমার হাতে আঘাত লাগে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই সকল শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ করেছিল।’
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা বলেন, ‘বাস হেলপারের অসৌজন্যমূলক আচরণকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন। এরপর বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বশীলরা এসে শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নেওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুল লতিফ বলেন,‘ দীর্ঘদিন ধরেই বাসের ভাড়া নিয়ে বাসের হেলপার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছিল। আজ আমার সামনেই এই ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে সকল শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বাস-মালিক সংগঠনের নেতারা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছেন, আলোচনা চলছে।’