অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসককে অবরুদ্ধ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১০
শেয়ার :
অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসককে অবরুদ্ধ

গাজীপুরের শ্রীপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা। গতকাল রবিবার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা চিকিৎসককে মারধর করতে উদ্ধত হন এবং অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এর আগে রাত পৌনে ১০টার দিকে ওই ব্যক্তিকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক যথাযথ চিকিৎসা না দেওয়ায় ওই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। 

নিহতের স্বজনরা জানান, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. বিজন মালাকার ইসিজির নাটক সাজান। দীর্ঘ সময় পর এক বয়কে দিয়ে রোগীর ইসিজি করান। মৃত ব্যক্তির ইসিজি করে জানানো হয় রোগী বেঁচে আছেন, দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তাকে মাওনা চৌরাস্তার পৃথক তিনটি হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করানো হয়। সব হাসপাতালের চিকিৎসকগণ জানান প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। 

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. বিজন মালাকার নিজের দায় এড়াতে ইসিজির নাটক সাজান। মৃত রোগীর প্রাণ আছে বলে রেফার্ড করেন অন্য হাসপাতালে।  

নিহত নইমুদ্দিন সরকার (৬৫) উপজেলার কেওয়া পূর্বথন্ড গ্রামের মৃত কেরুমোল্লার ছেলে। অভিযুক্ত জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. বিজন মালাকার।

নিহতের পুত্রবধূ মীম আক্তার বলেন, রাতে তার শ্বশুর অসুস্থ্য বোধ করেন। তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। একটি ইনজেকশন দিয়ে তিনি কক্ষে দরজা বন্ধ করে বসে থাকেন। আমার শ্বশুর মেঝেতে পড়ে ডাক্তার বাঁচান বাঁচান বলে গড়াগড়ি করছিলেন। আমরা ডাকাডাকি করলেও তিনি বের হননি। একপর্যায়ে তিনি মারা যান।  

ভাতিজা মোজাম্মেল বলেন, ডাক্তারের অবহেলার কারণে চাচার মৃত্যু হয়েছে। তার পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। নিজের ব্যর্থতা লোকাতে ইসিজির নাটক সাজান ডাত্তার বিজন মালাকার। দীর্ঘ সময় পর এক বয়কে দিয়ে ইসিজি করন। পরে বলেন, রোগীর প্রাণ আছে। দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চাচাতো সেখানেই মারা গেছেন। আমরা তার মৃত্যু নিশ্চিত হতে মাওনা চৌরাস্তার পৃথক তিনটি হাসপাতালে নেই। সেখানের চিকিৎসকগণ জানান প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. বিজন মালাকার অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই রোগীকে অসুস্থ অবস্থায় রাত পৌনে ১০টার দিকে আনা হয়। তার বুকে জ্বালা হচ্ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিছু না বলে রোগীর লোকজন তাকে বাহিরে কোথায় নিয়ে যায়। কিছু সময় পর নিয়ে এসে ডাক চিৎকার শুরু করে। তার অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করি। 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, হাসপাতালে রোগীর লোকরা ডাক্তারকে অবরুদ্ধ করে রাখার খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কর্মরত চিকিৎসক রোগীর ইসিজি করে জানান, রোগী মারা যায়নি। দ্রুত তাকে অন্যত্য রেফার্ড করা হয়। পরে শুনেছি, ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।