ফেলানীর বাবাকে বুকে জড়িয়ে নিলেন জামায়াত আমির

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯:৫৯
শেয়ার :
ফেলানীর বাবাকে বুকে জড়িয়ে নিলেন জামায়াত আমির

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের কবর জিয়ারত করেছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। এরপর ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম নুরুকে বুকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। সেই সঙ্গে আশ্বাস দেন সুষ্ঠু বিচারেরও।

গতকাল শুক্রবার বিকেল সোয়া ৪টায় কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা গ্রামে ফেলানীর বাড়িতে যান ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি ফেলানীর কবর জিয়ারত করে ফেলানীর বাবাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন।

এ সময় জামায়াত আমির ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম নুরু, মা জাহানারা বেগম ও তিন ভাই জাহান উদ্দিন, আরফান আলী ও আক্কাস আলীর সঙ্গে মতবিনিময় করে সবাইকে নতুন জামা-কাপড় উপহারসহ তাদেরকে আর্থিক সহায়তা দেন।

জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সীমান্তে ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও এ হত্যার সুবিচার হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে তৎপর ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ফেলানী হত্যার বিচারকে ত্বরান্বিত করবে এটা আমাদের দাবি।

তিনি বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সদস্যরা ফেলানীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছিল। ফেলানী হত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, সারাবিশ্বের মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছিল। এটি সারাবিশ্বে একটি আলোচিত ঘটনা। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে। এ সময় আন্তর্জাতিক আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার সুনিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম নুরু কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি এখনও আমাদের মেয়ে ফেলানীর মুখচ্ছবি ভুলতে পারছি না। আমার চোখের সামনেই বিএসএফের গুলিতে ফেলানীর মৃত্যু হয়। ন্যায়বিচার পেতে আমি ভারতে বহুবার গিয়েছিলাম। কিন্তু গত ১৫ বছরেও সেই ন্যায়বিচার আমি পাইনি। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’

ফেলানীর মা জাহানারা বেগমও কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘আমাদের মেয়ে ফেলানী হত্যার পর থেকে একটা দিনো আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি। এ হত্যার বিচার না হলে আমাদের মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে না। আমাদেরও শান্তি নেই। ফেলানী হত্যার সঙ্গে জড়িত বিএসএফ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

ফেলানীর পরিবারের সঙ্গে স্বাক্ষাতের সময় কেন্দ্রীয়, বিভাগ, জেলা ও স্থানীয় জামায়াতের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি ফেলানীর গ্রামে কলোনীটারী জামে মসজিদে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ড. শফিকুর রহমান ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের কদমতলা মোড়ে স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।