পটুয়াখালীতে আজহারীর মাহফিল শুরুর আগেই লোকে লোকারণ্য
তাফসিরুল কোরআন মাহফিল উপলক্ষে পটুয়াখালীতে এসে পৌঁছেছেন জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তিনি হেলিকপ্টারে পটুয়াখালীতে অবতরণ করেন। এরপর বিশ্রামের জন্য সার্কিট হাউজে চলে যান। সন্ধ্যা ৭টা নাগাত তার মাহফিল মঞ্চে ওঠার কথা রয়েছে। এদিকে মাহফিলকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীতে। জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন ঝাউতলা মাঠসহ আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। পৌর শহরের মোট ১০টি মাঠে আগত মুসল্লীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি রয়েছে নারীদের জন্য সংরক্ষিত।
সরেজমিনে মাহফিলে এলাকায় দেখা যায়, গত রাত থেকে মাহফিল প্যান্ডেলে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে অবস্থান করছে। আজ সকাল থেকে লোকে পরিপূর্ণ হয়ে যায় মাহফিল প্রাঙ্গণ। বিকেল নাগাদ মাহফিল প্রাঙ্গাণ এবং এর পাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
পটুয়াখালী ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের আয়োজনে জেলা জামায়াতের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন ঢাকা মহানগর জামাত দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধূরী।
মাহফিল আয়োজক কমিটি সূত্র জানায়, বরিশাল বিভাগের একমাত্র মাহফিলটি পটুয়াখালীতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাহফিলে কমপক্ষে প্রায় ১০ লাখ মানুষের আগমন ঘটবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন ঝাউতলা মাঠ ছাড়াও আরও ৯টি মাঠসহ মোট ১০টি মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে মুসল্লীদের জন্য। এরমধ্যে শুধুমাত্র নারীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে আবদুল হাই বিদ্যানিকেতন, হাউজিং স্টেটেট ও লতিফ মিউনিপিপ্যাল স্কুলের ৩টি মাঠ। নারীদের জন্য নিধারিত মাঠগুলো পুরো প্যান্ডেল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সারা শহরের সড়কে সড়কে শোভা পাচ্ছে ব্যানার ফেষ্টুন। আজহারীকে স্বাগত জানাতে তৈরি হয়েছে বিশাল বিশাল তোড়ন। সারা শহরকে মাহফিলের আওতায় আনতে লাগানো হয়েছে চার শতাধীক মাইক। তৈরি করা হয়েছে দেড় হাজার অস্থায়ী টয়লেট। নির্মাণ করা হয়েছে অজুখানা যেখানে একসঙ্গে কয়েক হাজার মানুষ ওজু করতে পারবেন।
পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আন নাহিয়ান জানান, বরিশাল বিভাগের মধ্যে মিজানুর রহমান আজহারীর এটিই প্রথম মাহফিল। তাই মাহফিলে পটুয়াখালী জেলা ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক ও লঞ্চযোগে লাখ লাখ মানুষ আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে। মাহফিল মাঠগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে ৫০টি এলইডি মনিটর ও লায়নার সাউন্ড সিস্টেম। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠের চারপাশে শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সকলের সহযোগীতায় বিশাল এই তাফসীর মাহফিল সফল ও সার্থক হবে এমনটাই প্রত্যাশা তার।
পটুয়াখালীর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম জানান, মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিপুল জনসমাগম হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ট্রাফিক ব্যবস্থা সচল রাখতে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বরিশাল থেকে রির্জাভ ফোর্স এসে জেলা পুলিশকে সহযোগিতা করছে। এছাড়া র্যাব ও সেনাবাহিনী সদস্যরা পুলিশকে সহযোগিতা করছে। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এ আয়োজনটি সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।