সভায় আজ কী আলোচনা

ক্রীড়া ডেস্ক
২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
সভায় আজ কী আলোচনা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসর ঘিরে বাড়তি উন্মাদনা ছিল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদও আশার কথা শুনিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন অন্যরকম এক বিপিএল উপহার দেবেন তারা। খুব স্বাভাবিকভাবেই আশায় ছিলেন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। এবারের বিপিএল ‘অন্যরকম’ই চলছে, তবে সেটি নেতিবাচক অর্থে!

অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েই যাত্রা শুরু হয়েছিল এবারের বিপিএলের। টুর্নামেন্টের আকাশে শঙ্কার কালো মেঘের আনাগোনাও তাই বেড়েছিল। শেষ পর্যন্ত আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। আসরজুড়ে অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হচ্ছে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে। বিপিএলে ফেরা দুর্বার রাজশাহী এই বিতর্কের কেন্দ্রে। পরে তাদের পদাঙ্ক অনুকরণ করতে দেখা গেল চিটাগং কিংসকেও। এই দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নিয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার জানান, পারিশ্রমিক নিয়ে নয়-ছয় করছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকেরা। এদিক থেকে ফরচুন বরিশাল ব্যতিক্রম বলে জানা গেছে বোর্ডের একাধিক সূত্রে।

বিপিএল পারিশ্রমিক নিয়ে জটিলতা অবশ্য নতুন কিছু নয়। প্রথম আসর থেকেই এই কলঙ্ক গায়ে মেখেছে টুর্নামেন্ট। মাঝে কয়েক বছর এই জায়গাটায় শৃঙ্খলনা আনতে পেরেছিল বিসিবি। নতুন করে এবারের আসরে ফিরে এসেছে পুরোনো বিতর্ক। প্রাপ্য পারিশ্রমিক না পেয়ে দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটাররা সিলেটে অনুশীলন বয়কট করেছিলেন স্থানীয় ও বিদেশি ক্রিকেটাররা। রাজশাহীর তৎকালীন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়ও চুক্তির টাকা না পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। এ নিয়ে বোর্ড সভাপতি ফারুককেও কথা বলতে হয়েছে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে।

এক টাকাও পারিশ্রমিক না পেয়ে এবারের বিপিএল খেলতে নেমেছিলেন ক্রিকেটাররা। অথচ টুর্নামেন্ট শুরুর আগে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের ৫০ শতাংশ বুঝিয়ে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। বোর্ডের তরফ থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছিল এ ব্যপাারে। কিন্তু কর্ণপাত করেনি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। বোর্ডের তরফ থেকেও শক্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। আজ বিসিবির সভায় এ নিয়ে আলোচনা হবে বলে বোর্ডের একটি সূত্রে জানা গেছে।

আলোচনা হতে পারে পিছিয়ে যাওয়া ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নিয়েও। সভাসূচির কেন্দ্রবিন্দু নাকি এই বিপিএলই। সেখানে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে কথা উঠবে। টুর্নামেন্ট চলাকালীন কিছু সন্দেহভাজন বিষয়ও অনেকে চোখে পড়েছে। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের মতো গুরুতর কাণ্ডের ফিসফাঁসও শোনা যাচ্ছে। যদিও পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না কিছুই। আবার ফিক্সিংয়ের অভিযোগও উড়িয়ে দেওয়া কঠিন। খোদ ফ্র্যাঞ্চাইজির কয়েকটির মালিকপও স্পট ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাদের কাছে কিছু ম্যাচে ঘটেছে অস্বাভাবিক ঘটনা। সবমিলিয়ে এবারের আসরটা ঠিক প্রত্যাশামাফিক হচ্ছে না।

টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হচ্ছে দর্শক উপস্থিতি। দেশের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও বিপিএলের বেশির ভাগ ম্যাচেই গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ঢাকার প্রথম পর্বে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন দর্শকেরা। চায়ের শহর সিলেটেও উন্মাদনা ছিল ভক্তদের। ঢাকা-সিলেটের পর বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও সরব ছিলেন দর্শকেরা। দুই শহর ঘুরে আগামীকাল ঢাকায় ফিরছে বিপিএল। দিনের প্রথম ম্যাচে ফরচুন বরিশাল লড়বে সিলেট স্ট্রাইকার্সের সঙ্গে। সন্ধ্যার ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীর প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স। ইতোমধ্যে শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স। ৯ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট তাদের। ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে বরিশাল। ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট চিটাগং কিংসের। তাদের পেছনে আছে যথাক্রমে খুলনা টাইগার্স (৮), দুর্বার রাজশাহী (৮), ঢাকা ক্যাপিটালস (৬) ও সিলেট স্ট্রাইকার্স (৪)।