আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যমের সংস্কার হবে না: কামাল আহমেদ

রাজশাহী ব্যুরো
২১ জানুয়ারী ২০২৫, ২০:৩১
শেয়ার :
আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যমের সংস্কার হবে না: কামাল আহমেদ

আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যমের সংস্কার হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বিভাগের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

কামাল আহমেদ বলেন, ‘আর্থিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হলে ভালো গণমাধ্যম আশা করা যায় না। এর মধ্যে শৃঙ্খলা আনা দরকার। সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ করতে তাদেরকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। দলীয় বিভাজন ভুলে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী ও অংশীজনের সাথে মতবিনিময় করেছি। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নিকট হতে গণমাধ্যম সংস্কার বিষয়ে প্রস্তাব আহ্বান করেছি। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে কিছু প্রস্তাব পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আরও যেসব প্রস্তাব পাওয়া যাবে সেগুলো পর্যালোচনা করে সরকারের নিকট একটি গ্রহণযোগ্য সুপারিশ পেশ করব।’

গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতা পেশার অনিয়মের কথা উল্লেখ করে কামাল আহমেদ বলেন, ‘এত গণমাধ্যমের পাঠক-শ্রোতা আছে কি না তা ভাবনার বিষয়। যে পত্রিকা হকারদের নিকট আসে না সে পত্রিকা কীভাবে অনুমোদন পায় এটা সরকার তদারকি করবে। গণমাধ্যমের সমস্যাগুলো আমাদের সবার, এটির সমাধান আমাদেরকেই করতে হবে।’

এর আগে গণমাধ্যম সংস্কার বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে প্রস্তাব আহ্বান করলে গণমাধ্যম কর্মীরা পরীক্ষার মাধ্যমে গণমাধ্যম কর্মী বাছাই করা, সাংবাদিকতা পেশায় যোগদানে জাতীয় পর্যায়ে নীতিমালা তৈরি, চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আর্থিক সুরক্ষা, নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো, শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ, সাংবাদিক নিয়োগে ডোপ টেস্ট, সংবাদপত্রে দলীয়করণ না করা, ওয়েজ বোর্ডের একটি নতুন কাঠামো তৈরি করা, টেলিভিশন সাংবাদিকদের জন্য ওয়েজবোর্ড চালু ও নীতিমালা প্রণয়ন, ফেসবুক এবং অনলাইন পোর্টালের দৌরাত্ম্য দূরীকরণ, প্রেস কাউন্সিলকে বার কাউন্সিলের মডেলে উন্নীতকরণ, সাংবাদিকদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক কমিশন গঠন করা, জীবনবীমা ও পেনশনের ব্যবস্থা করা, সরকারি ক্রোড়পত্র বণ্টনে বৈষম্য দূর করা, কোনো কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানকে গণমাধ্যমে সম্পৃক্ত না করা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা সামগ্রীর ব্যবস্থা করা, রাজনৈতিক প্রভাব দূর করেগণমাধ্যমের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ফেলা, আমলাতান্ত্রিক প্রভাব দূর করা, নিউজপ্রিন্টের দাম কমানো, গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্বশীলতা বাড়ানো, সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সকলের বার্ষিক সম্পদের হিসাব প্রকাশের ব্যবস্থা করাসহ নানা প্রস্তাব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম কমিশনের সদস্য ড. গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, বেগম কামরুন্নেসা হাসান, মোস্তফা সবুজ ও জিমি আমির উপস্থিত ছিলেন। সভায় রাজশাহী বিভাগের আট জেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার শতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।