দেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত প্রথম মৃত্যু
দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত নারী সানজিদা আক্তার (৩০) মারা গেছেন। গতকাল বুধবার রাতে মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এইচএমপিভি শনাক্ত হওয়া কারও মৃত্যুর ঘটনা দেশে এটিই প্রথম।
সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরিফুল বাশার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এইচএমপিভি সংক্রমণ ছাড়াও তার বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা ছিল। সানজিদা আক্তারের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে।
চিকিৎসকরা বলেছেন, রোগীর নিউমোনিয়া ও ভাইরাসজনিত সমস্যা অনেকটা ভালো হয়ে গিয়েছিল। তবে স্থুলতা ও কিডনি সমস্যা ছিল। অন্যান্য সমস্যার কারণে তাকে বাঁচানো যায়নি।
জানা গেছে, গত ১২ জানুয়ারি সানজিদা আক্তারের এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। জানা যাচ্ছিল, ওই নারীর বিদেশ সফরের কোনো ইতিহাস ছিল না। তার স্বামী বিদেশে থাকলেও সম্প্রতি দেশেও আসেননি।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বাংলাদেশে প্রথম ২০১৭ সালে এইচএমপিভি শনাক্ত হয়। এরপর কমবেশি প্রতিবছরই শনাক্ত হয়ে আসছে। এ ভাইরাস নিয়ে ভয়ের কিছু নেই বলা হলেও পার্শ্ববর্তী একাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে সতর্কতাও জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও রয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভির বিস্তার ঠেকাতে গত সোমবার বিশেষ নির্দেশনা জারি করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
নির্দেশনায় এইচএমপিভির বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দরের যাত্রী, স্টাফ ও দর্শনার্থীদের মুখে মাস্ক রাখা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কারও মধ্যে জ্বর, কফ, শ্বাস ছোট হওয়ার মতো এইচএমপিভির লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের হেলথ সার্ভিসে জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনাকারী দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এবং যেসব দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী রয়েছে, সেসব দেশ থেকে যাত্রী আনার ক্ষেত্রেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিমানের ভেতর যদি কারও মধ্যে জ্বর, কফের মতো এইচএমপিভির লক্ষণ দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের হেলথ সার্ভিসে জানাতে হবে।