টিউলিপকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার

টাইমসের প্রতিবেদন

আমাদের সময় ডেস্ক
১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
টিউলিপকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার

যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ ঘিরে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। গতকাল বুধবার বিষয়টি পার্লামেন্টে তোলেন বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি বেইডনক। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিটি মিনিস্টার হিসেবে পরিচিত টিউলিপ আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন টিউলিপ। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে তাকে চিঠি দিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে স্টারমার বলেন, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে আমি আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছি।’

টিউলিপকে ঘিরে ওঠা বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে

গতকাল পার্লামেন্ট অধিবেশনে বক্তব্য দেন বিরোধীদলীয় নেতা। বিষয়টি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বেইডনক বলেন, ‘বাজারে যখন অস্থিরতা চলছে, তখন সাবেক সিটি মিনিস্টারকে ঘিরে উদ্ভূত সংকটে জড়িয়ে এ বিষয়ে মনোযোগ হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পদত্যাগে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) গভীর দুঃখ পেয়েছেন বলে গতকাল বলেছেন। এটি তার সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমাদের কী বার্তা দেয়? আর ঘটনাটি ছিল দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির ফৌজদারি তদন্ত হচ্ছে।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বেইডনক বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সাবেক সিটি মিনিস্টারকে উপহার দেওয়া লন্ডনের সম্পত্তি (ফ্ল্যাট) লুটপাটের অর্থে কেনা হতে পারে।’

যুক্তরাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘তাই কোনো সম্পত্তি চুরি করা অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে কিনা, তার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করতে, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে পুরোপুরি সহায়তার প্রস্তাব দেবেন কিনা?’ জবাবে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, ‘সাবেক সিটি মিনিস্টার নিজের বিষয়টি স্বাধীন উপদেষ্টার (লাউরি ম্যাগনাস) কাছে তুলে ধরেছেন। এখানে কোনো অনিয়ম পাননি উপদেষ্টা। তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করছেন সাবেক সিটি মিনিস্টার।’

সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে উঠে আসে, আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট উপহার নেন টিউলিপ। লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড এলাকায় একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা ফ্ল্যাটে কয়েক বছর বসবাস করেন টিউলিপ। ওই সময় নিজের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ওই ফ্ল্যাটের কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিধিবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস তদন্ত করেন। মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের শাসনকাঠামোর সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ততা যে তার ও লেবার সরকারের সুনামের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে, সে বিষয়ে টিউলিপ পর্যাপ্ত সতর্ক ছিলেন না, যা ‘খুবই দুঃখজনক।’ তবে ম্যাগনাস প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, ‘আপনি চাইলে তার (টিউলিপ) চলমান দায়িত্ব বিবেচনা করতে পারেন।’ চিঠিতে এও উল্লেখ করা হয়েছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে যেসব দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, র সপক্ষে টেকসই কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।