পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বরখাস্ত

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২২:০০
শেয়ার :
পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বরখাস্ত

অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান এ আদেশ দেন। শওকত উদ্দিনের দাবি রাজনৈতিক কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

আজ সোমবার পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তার বরখস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মসজিদটি পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়া।

তিনি বলেন, শওকত উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ ছিল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সদ্য বরখাস্ত হওয়া প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূইয়া বলেন, আজ (সোমবার) সকাল ১০টার সময় পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমাকে মসজিদে আসতে নিষেধ করেছেন। কি কারণে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে এতটুকু জানতে পেরেছি, আমি আওয়ামী পরিবারের সদস্য হওয়ার কারণে আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই বরখাস্ত করা হয়েছে।

শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আমি সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর ২০১৫ সালে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। আমি সরকারি চাকরি জীবনে কিংবা পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা থাকাকালীন সময়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সদা সচেষ্ট ছিলাম।

প্রসঙ্গত, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে গত বছরের ৩০ নভেম্বর পাওয়া গিয়েছিল রেকর্ড অঙ্কের টাকা ও স্বর্ণালংকার। মসজিদের দান বাক্স থেকে পাওয়া যায় ২৭ বস্তা নগদ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার। তখন অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ হয়। সেবার পাওয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। ১১টি লোহার সিন্দুক খু‌লে ওই পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। প্রতি তিন মাস পরপর এই সিন্দুক খোলা হয়ে থাকে।

ঐতিহাসিক এই পাগলা মস‌জি‌দের দান‌সিন্দুক থে‌কে এ পর্যন্ত কত টাকা পা‌ওয়া গিয়েছে এ বিষয়ে বারবার মসজিদ কমিটির কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলেও সেটি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে আসছেন কর্তৃপক্ষ। এ নিয়েও মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় বিভিন্ন সময়ে।

তবে, গত বছর ৪ ধাপে সিন্দুক খুলে পাওয়া গিয়েছিল ২১ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮১ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার।

মনের আশা পূর্ণ হয় -এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন। বি‌শেষ ক‌রে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কয়েক হাজার মানু‌ষের ঢল না‌মে মসজিদটিতে।