সাবেক ৩ এমপির বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে
বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে নিলামে উঠেছে শুল্কমুক্ত কোটায় আনা ল্যান্ড ক্রুজার ব্রান্ডের ৩টি বিলাসবহল গাড়ি। সাবেক তিন সংসদ সদস্যের জন্য গাড়ি তিনটি আনা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি গাড়ির জন্য দরপত্র দাখিল হলেও বাকি দুটি গাড়ির জন্য দরপত্রই জমা দেয়নি কেউ।
গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর সংসদ ভেঙে যাওয়ায় বন্দর থেকে এসব গাড়ি ছাড়িয়ে তা ব্যবহারের সুযোগ পাননি দ্বাদশ সংসদের সদস্যরা।
এর আগে গেল বছরের ১৭ জুলাই গাড়ি ৩টি মোংলা বন্দরে আমদনি করেন টাঙ্গাইল-০৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয়, দিনাজপুর-০১ আসনের মুহাম্মদ জাকারিয়া ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাসিমা জামান ববি। তারা এখন পলাতক রয়েছেন।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে গত ৬ আগষ্ট সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। অনেক কিছুর মতো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়ি হাতছাড়া হয় সাবেক ওই তিন সংসদ সদস্যের। ফলে মোংলা বন্দরে পড়ে থাকে সাবেক এমপিদের ল্যান্ডক্রুজার ব্রান্ডের ৩টি প্রাডো গাড়ি। যার একটির বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। গাড়ি ৩টি দীর্ঘদিন বন্দর শেডে পড়ে থাকায় বিড়াম্বনার শিকার হচ্ছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, এই ৩টি গাড়িসহ মোট ৩০০টি গাড়ি মোংলা বন্দরে পড়ে আছে। বারবার নিলামে তুললেও এসব গাড়ি বিক্রি হয়না। ফলে বছরের পর বছর এই বন্দরের শেড ও ইয়ার্ডে গাড়িগুলো পড়ে থেকে বিকল হচ্ছে।
তার আশা দ্রুত আমদানিকারকরা এই সমস্যার সমাধান করবেন।
এদিকে আত্মগোপন কিংবা বিদেশে পালিয়ে যাওয়া সংসদ সদস্যের গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে আমদানিকারকদের আইনি নোটিশ দেওয়ার পর তা নিলামে তোলে মোংলা কাস্টমস হাউস। তবে গত বছরের ২৫ নভেম্বর নিলামে তোলা এসব গাড়ির মধ্যে একটির বিপরীতে দরপত্র জমা পড়লেও বাকি দুটির বিপরীতে দরপত্রই জমা দেয়নি নিলামে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা।
মোংলা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার মো. রুবেল হাসান বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই সাবেক এমপিদের তিনটি ল্যান্ড ক্রুজার ব্রান্ডের প্রাডো গাড়ি আমদানি করা হয়। এরপর এই গাড়ি তিনটি সময় মতো কেউ ছাড়িয়ে না নেওয়ায় নিজের অধীন নেয়। এরপর তা গত বছরের ২৫ নভেম্বর নিলামে তোলা হয়। তবে এখনও বিক্রয় আদেশ হয়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে প্রথম এইচ এম এরশাদ এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা দেন। ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকার বিধানটি বাতিল করলে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বিধানটি আবার চালু করেন। এতে গেল ১৫ বছরে সরকার রাজস্ব হারায় কয়েক হাজার কোটি টাকা।