বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সুসম্পর্ক রয়েছে: ডা. তাহের
বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপির সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো ধরণের দূরত্ব নেই বরং সুসম্পর্ক রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
আজ শনিবার দুপুরে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার নিজমেহার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আগামী দিনের রাজনীতি হবে ইতিবাচক এবং সকল দলেই ইতিবাচক হবেন, এটা আমরা আশা করি। সুতরাং বিএনপি যে ঐক্যের কথা বলেছেন এবং জামায়াতের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই।
তিনি আরও বলেন, এখন যারা রাজনীতি করছেন অর্থাৎ ইসলামীসহ অন্যান্য দল, তাদের সকলের সঙ্গে আমরা সু-সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছি। যোগাযোগ রক্ষা করছি এবং এই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
পিআর পদ্ধতি নির্বাচন বৈষম্য দূর করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখন যে পদ্ধতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি তার চাইতে তুলনামূলক ভালো পিআর পদ্ধতি, আমরা এটা মনে করি। বিশ্বের প্রায় ৬২ -এর অধিক দেশে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হচ্ছে এবং এই পদ্ধতি আমরা সফল হিসেবে দেখেছি। এই পদ্ধতির নির্বাচনের বৈশিষ্ট হচ্ছে প্রত্যেকটি মানুষের মতকে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। আমরা দেখেছি ৫০ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত ব্যক্তির কাছে ৪৯ হাজার ভোট পাওয়া ব্যক্তির মূল্য থাকে না। কারণ ওই ফলাফল তখন শূন্য হয়ে যায়। পিআর পদ্ধতিতে সারাদেশে যে ভোট পায় সে ভোটের হার নির্ধারণ করে প্রতিনিধিত্ব আসে।
তাহের বলেন, পিআর পদ্ধতিতে যে দলের ভোটের হার বেশি থাকবে, তাদের প্রতিনিধিত্ব বেশি আসবে। একই সঙ্গে আরেক প্রশ্ন আসছে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের ইস্যু। সেটাও সকলে ঐক্যমত হলে বিবেচনায় আনা যেতে পারে।
বাংলাদেশের তিন দিকে প্রতিবেশি দেশ হচ্ছে ভারত। জামায়াতে ইসলামী যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তাহেল পররাষ্ট্রনীতি কি ধরণের হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ড. তাহের বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছি এবং খুবই পরিস্কার। সেটা হচ্ছে আমরা সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। সমতা, অধিকার এবং আমাদের নিজস্বতার স্বীকৃতির ভিত্তিতে। আমরা মনে করি প্রত্যেক দেশ তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমে পরিচালিত হবে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও আমাদের নীতি একই রকম।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, মানুষ যেন দেখে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগের প্রথা আর নেই। আমরা জাতিকে নতুন স্বপ্ন দেখাব, মিথ্যাচার, লুটপাট, অত্যাচার ও দখলের রাজনীতি নেই। এক মহান বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমরা ঘরে ঘরে, দলের অফিসে অফিসে একটি ইতিবাচক সুবাতাস ছড়িয়ে দিতে চাই।
জামায়াত কারো ওপর কোনো মত চাপিয়ে দিবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশে নারীদের সম্পূর্ণ অধিকার দেয়া হবে। অমুসলিমরা নিরাপদভাবে তাদের সম্পূর্ণ অধিকার ভোগ করবে।
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে ডা. তাহের বলেন, ইতিহাস পুনরাবৃত্তি ঘটে, ইতিহাস কোনো জালেমকে ক্ষমা করে না, ফ্যাসিবাদ ফিরে আসে না। আমরা পদত্যাগ চেয়েছি আর আল্লাহ দেশ ত্যাগ করিয়েছেন।
কর্মী সম্মলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসেন, কুমিল্লা মহানগর আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, চাঁদপুর জেলা আমির মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী, সাবেক আমির মাওলানা আব্দুর রহিম পাটোয়ারী, নায়েবে আমির এড. মাসুদুল ইসলাম বুলবুল, সেক্রেটারি অ্যাড. মো. শাহজাহান মিয়া, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মাওঃ আবুল হোসাইন।
সভাপতিত্ব করেন শাহরাস্তি উপজেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল এবং সঞ্চালনায় ছিলেন পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম।