তাড়াশে মধু সংগ্রহের উৎসব, ফলন বৃদ্ধির আশা কৃষকের

তাড়াশ প্রতিনিধি
১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১৪
শেয়ার :
তাড়াশে মধু সংগ্রহের উৎসব, ফলন বৃদ্ধির আশা কৃষকের

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হাজার হাজার হেক্টর জমির সরিষা ফুল খেকে মৌচাষিদের মধু সংগ্রহের উৎসর শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে মৌমাছির মাধ্যমে ফুলের পরায়গন বৃদ্ধির ফলে সরিষার ভাল ফলনের আশা করছেন কুষক।

এ বছর দেড় থেকে দুইশ মৌচাষি ঘরগ্রাম, মাকড়শোন,কামরশোন, কুদ্দইল, উলিপুর, পাচান, মাগুরা, হামকুরিয়া, মাধাইনগর, ঝুরঝুরি, মান্নান নগরসহ উপজেলার ১২০ থেকে ১৩০টি সরিষাক্ষেত সংলগ্ন পয়েন্টে তাবু ফেলে মধু সংগ্রহ করছেন।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর তাড়াশ উপজেলায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আর এ সকল ক্ষেতের পাশে ভ্রাম্যমাণ মৌচাষীরা ৭ হাজার ৬ শ’ ৩৯ টি মৌ-বক্স বসিয়ে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করছেন।

তাদেরই একজন আসকান মিয়া জানান, কাঠের ফ্রেমে একটি রানী মৌমাছিসহ ২ থেকে ৩শ মৌমাছি নিয়ে তৈরী হয় একটি মৌ-বাক্স। আমরা প্রতিদিন সকালে বাক্সগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে রেখে আসি। বিকেলে এগুলো এনে এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় মৌমাছি মুক্ত করে ঘুর্ণায়মান ড্রামের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করি। প্রতিটি মৌ-বাক্স থেকে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম মধু সংগ্রহ করা যায়। অধিকাংশ মৌচাষি এরূপ ১২০ থেকে ১৩০ টি বাক্স ব্যবহার করে থাকেন।

এ প্রসঙ্গে মাকড়শন মাঠে মধু সংগ্রহরত মৌচাষি মিরাজুল বলেন, ‘এ বছর সরিষার ফুল ভাল থাকায় মধুও পাচ্ছি বেশি। প্রতি কেজি মধু পাইকারীতে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা বিক্রি করা যায়।’ 

প্রতিরামপুর গ্রামের সরিষা চাষী আলামিন হোসেন মনে করেন, সরিষা ফুলের মধু নিতে মৌমাছির ব্যাপক বিচরনে ফলে পরাগায়নের মাধ্যমে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাতক্ষীরা, সুন্দরবন,ঝলকাঠি,বরিশালসহ দেশে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মৌচাষিরা এখানে মধু সংগ্রহ করছেন। আশা করা হচ্ছে, তারা ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করবেন।’ 

কৃষি কর্মকর্তার মতে, মধুর অপার সম্ভাবনাময় এ উপজেলায় আধুনিক পদ্ধতিতে মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ যন্ত্র স্থাপন করলে মৌচাষিরা অনেক উপকৃত হবেন। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলের মধু বিদেশেও রপ্তানী করা যাবে।