পুড়েছে এজলাস /

আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে ‘হচ্ছে না’ বিচারকাজ

অনলাইন ডেস্ক
০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪:০৩
শেয়ার :
আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে ‘হচ্ছে না’ বিচারকাজ

আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের অস্থায়ী আদালতে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার ‘বিচারকাজ হচ্ছে না’ বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। এমন আশ্বাস পেয়ে সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিয়েছেন বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

এদিকে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতের আগুনে পুড়ে যাওয়া কক্ষ পরিদর্শন করেছেন বিডিআর বিদ্রোহ মামলার বিচারক। তিনি বলেন, ‘এখানে বর্তমানে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। পরবর্তী দিন ও স্থান পরে জানানো হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই অস্থায়ী আদালতে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক দ্রব্য মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে আগুনে পুড়ে যাওয়ার কারণে তা আর হচ্ছে না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদমর্যাদার) চিফ প্রসিকিউটর প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘এখানে আজকে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করার মতো পরিবেশ নেই। সঙ্গত কারণে রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের দুই আইনজীবী পক্ষকে ডেকে বিচারক নির্দেশনা দিয়েছেন আজকের মতো আদালতে কার্যক্রম মুলতবি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে এখানে আদৌ আদালত বসবে কিনা সে সিদ্ধান্ত পরে হবে। তাই আমরা উভয় পক্ষের আইনজীবীরা এখান থেকে চলে যাচ্ছি। পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে শুনানি কার্যক্রমে আমরা অংশ নেবো।’ এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী পারভেজ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে অস্থায়ী আদালত বসানোর প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে মাদ্রাসার সামনের সড়কে অবস্থান নেয় আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনের সড়ক, বকশীবাজার মোড় এবং আশপাশের গলির প্রবেশমুখ বাঁশ দিয়ে আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা। এতে বকশীবাজার মোড় থেকে শিক্ষা বোর্ড এবং চকবাজারের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মাদ্রাসার ভেতরে মাঠে বিচারকাজ চলমান থাকলে শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। এর আগে বেশ কয়েকবার মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পরও কর্ণপাত করেনি তারা। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আজ সড়ক অবরোধ করেছে।

পরে মাঠে বিচারকাজ পরিচালনা হচ্ছে না, এমন খবরের পর সড়কের অবরোধ তুলে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১২টার পর থেকে তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে দেখা যায়। এতে যান চলাচল আবারও শুরু হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এদিকে মধ্যরাতে অস্থায়ী এই আদালতের এজলাস কক্ষে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় মাদ্রাসার বাইরে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি অবস্থান করলেও প্রধান দুটি ফটক তালাবদ্ধ থাকার কারণে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। আগুনে কিছু নথি ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে। 

হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয়। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।