উপদেষ্টার অপেক্ষায় গুদামে পড়ে থাকা ত্রাণের কম্বল বিতরণের নির্দেশ

রাজশাহী ব্যুরো
০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯:১৭
শেয়ার :
উপদেষ্টার অপেক্ষায় গুদামে পড়ে থাকা ত্রাণের কম্বল বিতরণের নির্দেশ

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করবেন। তাই তার সফরসূচির আওতায় থাকা প্রতিটি উপজেলার জন্য জেলা পরিষদ থেকে ২ হাজার পিস করে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই সময় সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে উপদেষ্টা সফর সংক্ষিপ্ত করে ঢাকায় ফিরে যান। এ কারণে রাজশাহী ও বগুড়ার তিনটি উপজেলায় কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছিল। এরপর কনকনে শীতেও ওই কম্বলগুলো বিতরণ করা হয়নি। তবে গতকাল রবিবার মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, উপদেষ্টার আপাতত সফরে যাচ্ছেন না। তাই কম্বলগুলো সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইএনও) বিতরণের ব্যবস্থা নেবেন।

জানা গেছে, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের গত ২৪ থেকে ২৯ ডিসেম্বর হেলিকপ্টারে চড়ে উত্তরবঙ্গের ১২টি জেলা সফর করার কথা ছিল। গত ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে রংপুর বিভাগের গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে কম্বল বিতরণ করে তার রাজশাহী বিভাগে আসার কথা ছিল। ওইদিন বিকেলে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের কথা ছিল। পরদিন ২৮ ডিসেম্বর বগুড়ার শিবগঞ্জ, জয়পুরহাটের কালাই, আক্কেলপুর ও নওগাঁর আত্রাইয়ে এবং ২৯ ডিসেম্বর রাজশাহীর পুঠিয়া, মোহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল এবং গোমস্তাপুরে একই কর্মসূচি ছিল এই উপদেষ্টার।

তবে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উত্তরবঙ্গ সফরের তৃতীয় দিনে রংপুর বিভাগ থেকেই ঢাকায় ফিরে যান উপদেষ্টা। ফলে সফরসূচিতে থাকলেও যাওয়া হয়নি রাজশাহী বিভাগে। এই বিভাগের তিনটি উপজেলায় উপদেষ্টার বিতরণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে সরবরাহ করা কম্বল বিতরণ করা হয়নি। এ অবস্থায় উপজেলা প্রশাসনের স্থানীয় কর্মকর্তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। কম্বল বিতরণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন সংশ্লিষ্ট উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের পিআইও আবদুল আলীম বলেন, ‘কম্বল আমার হেফাজতেই আছে। ওপর থেকে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। কোনো সিদ্ধান্ত না এলে ইউএনও স্যার সিদ্ধান্ত নেবেন’। 

রাজশাহীর মোহনপুরের ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয়ের বিতরণের জন্য যেসব কম্বল এসেছিল, সেগুলো এখনো গুদামেই রাখা আছে। এতোদিন কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে আজ আমাদের জানানো হয়েছে, কম্বলগুলো বিতরণ করতে হবে। আমরা বিতরণের প্রক্রিয়া করছি।’

কম্বল বিতরণের বিষয়ে রাজশাহী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু. রেজা হাসান আমাদেও সময়কে বলেন, ‘উপদেষ্টা আবার আসবেন কি না, আমরা এতোদিন নিশ্চিত হতে পারিনি। আবার কম্বল বিতরণ করতেও বলা হয়নি। তবে আজ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, উপদেষ্টা মহোদয় কম্বল বিতরণে আপাতত আসছেন না। তাই কম্বলগুলো বিতরণ করে দিতে হবে। আমরা অলরেডি ইউএনওদের জানিয়ে দিয়েছি, তারাই কম্বল বিতরণ করে দেবেন।’

রাজশাহী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দীন আল ওয়াদুদ জানান, ‘পুরো জেলার জন্য ১০ হাজার কম্বল পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া ৭৮ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। এ টাকায় আরও প্রায় ৩৫ হাজার পিস কম্বল কেনা হয়েছে। এগুলো বিতরণের জন্য ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। আরও পাঁচ হাজার কম্বল পাওয়া যাবে বলে চিঠি পেয়েছি। এই কম্বলও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কখনোই তো চাহিদার সবটা পাওয়া যায় না। এভাবে চালিয়ে নিতে হয়।’