অপহৃত নারী চিকিৎসকের খোঁজ মেলেনি, থানায় মামলা

রাজশাহী ব্যুরো
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:২৯
শেয়ার :
অপহৃত নারী চিকিৎসকের খোঁজ মেলেনি, থানায় মামলা

রাজশাহীতে নিজ বাসা থেকে অপহৃত হওয়ার দুই দিন পরও নারী চিকিৎসক শাকিরা তাসনিম দোলার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপহরণকারীদের চিনতে পেরেছেন চিকিৎসকের বাবা আবু তাহের খুরশিদ বকুল। তবে অপহরণকারীদের এখনই পরিচয় প্রকাশ করতে চায় না পুলিশ।

গতকাল সোমবার রাতে চিকিৎসকের বাবা বাদী হয়ে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেন। অপহরণকারী ব্যক্তিরা ওই চিকিৎসকের মা রেহানা পারভীনকে (৫১) পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অপহরণের শিকার ওই চিকিৎসক রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) পাস করেছেন। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাদের বাসা রাজশাহী নগরীতে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন জানান, পুলিশের দিক থেকে ওই চিকিৎসককে উদ্ধারের সব ধরনের তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গ থানা থেকে তার বাবাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বাদী হয়ে রাতে নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি নম্বরসহ শনাক্ত করতে পেরেছে। এই নম্বর বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখন কড়া নজরদারি চলছে।

চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, ‘মামলার বাদী অপহরণকারীদের চিনতে পেরেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তবে তদন্তের জন্য এজাহারভুক্ত আসামিদের নাম জানানো যাবে না।’ 

অপহৃত চিকিৎসকের মামা জানান, আবু তাহের খুরশিদ বকুল কথা বলতে পারছেন, কিন্তু ভীষণ অসুস্থ। তাকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর অচেতন করার জন্য ইনজেকশন দেওয়ার কারণে তিনি শারীরিকভাবে খুব দুর্বল।

এর আগে গতকাল অপহৃত চিকিৎসকের মা জানিয়েছিলেন, গতকাল ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য তার স্বামী মসজিদে যান। এ সময় তিনি বাইরের ফটকে তালা লাগিয়ে চাবি সঙ্গে নিয়ে যান। একটু পরই তালা খোলার শব্দ পেয়ে তিনি এগিয়ে যান, এত তাড়াতাড়ি নামাজ না পড়ে ফিরে আসছেন কি না, তা দেখতে। দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অপহরণকারী ব্যক্তিরা তার স্বামীকে জিম্মি করে চাবি নিয়ে এসেছে। এ সময় অপহরণকারী ব্যক্তিরা তাঁকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেয়। মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। এরপর তারা তাঁর গলা চেপে ধরে। তারা যখন তাঁকে ছেড়ে দেয়, তখন তিনি দৌড় দিয়ে নিচে নেমে রাস্তার ওপর পড়ে যান। ততক্ষণে অপহরণকারী ব্যক্তিরা তাঁর মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে চলে যায়।