প্রেমের টানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছুঁটে এসেছেন ইউক্রেনের যুবক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:৪৪
শেয়ার :
প্রেমের টানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছুঁটে এসেছেন ইউক্রেনের যুবক

প্রেমের টানে হাজারো মাইল দূরের ইউক্রেন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের কালাছড়ায় ছুঁটে এসেছেন অ্যান্দ্রো প্রকিপ নামের এক যুবক। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর প্রেমিকা বৃষ্টি আক্তারকে করেছেন বিয়েও। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর নিজের নাম রেখেছেন মোহাম্মদ। এ নিয়ে খুশি বৃষ্টির পরিবার ও গ্রামবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেসবুকে পরিচয় হয় বৃষ্টি-প্রকিপের। পরে টানা দুই বছরের প্রেম। ধীরে ধীরে সে প্রেম গভীর হতে থাকে। বাঁধা হয়নি ছয় হাজার কিলোমিটারের পথ। বাধা হয়নি ধর্ম। প্রেমের শেষ পরিণয় বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছেন তারা।

আজ সোমবার সরেজমিনে বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কালাছড়া গ্রামে দেখা মিলে বৃষ্টি ও প্রকিপের। কথা বলেন তাদের ভালোবাসা নিয়ে। জানালেন বিয়ে করতে পেরে তারা খুশি। সবার দোয়া চান তারা।

কালাছড়া গ্রামের কামাল মিয়ার মেয়ে বৃষ্টি। এসএসসি পাস। টুকটাক ইংরেজি জানেন। বছর দুয়েক আগে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠান প্রকিপকে। সেই থেকে প্রেমের শুরু। ইউক্রেনীয় যুবক প্রকিপ বর্তমানে পোল্যান্ড বসবাস করেন। তবে পেশাগত কারণে তিনি বেলজিয়ামে থাকেন। গত ১৯ ডিসেম্বর বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশে আসেন প্রকিপ। সেদিনই বিয়ে করেন বৃষ্টিকে।

বৃষ্টি বলেন, ‘প্রথমে প্রকিপের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর আমাদের মাঝে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে প্রকিপ আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়, কিন্তু তাকে আমি বলি প্রেম নয় বিয়ে করতে হবে। এরপর দুই বছর অপেক্ষায় থাকি। অবশেষে সে বাংলাদেশে আসে। পরে তাকে এয়ারপোর্ট থেকে গ্রহণ করি। এরপর আদালত ও সামাজিকভাবে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই।’

তিনি বলেন, ‘প্রকিপ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। আগামী বছর সে আমাকে পোল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজ চলছে। আমার পরিবারের সবাই খুশি। আমরা সবারর কাছে দোয়া চাই।’

প্রকিপ বলেন, বৃষ্টিকে বিয়ে করতে পেরে সে খুব খুশি। বাংলাদেশ তার ভালো লাগছে। শিগগিরই তার স্ত্রীকে নিয়ে যাবেন পোল্যান্ডে। আগামী বছর তিনি ফের বাংলাদেশে আসবেন। মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেও তিনি অনেক খুশি বলে জানান।

 গ্রামবাসী বলেন, তাদের গ্রামে ভিনদেশী এক যুবক প্রেমের টানে ছুটে এসেছেন, এতে তারা অনেক খুশি। সে আশার পর শরীয়াহ্‌ মোতাবেক স্থানীয় ইমামের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বৃষ্টির সঙ্গে তাকে বিবাহ দেওয়া হয়। গ্রামের সবাই তাকে জামাই হিসেবে আপন করে নিয়েছেন বলেও জানান তারা।

 কালাছড়া মসজিদের ইমাম শাইখুল ইসলাম জানান, আদালতের মাধ্যমে খ্রিস্টান ধর্মালম্বী প্রকিপ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ে করে বৃষ্টিকে। পরে তারা গ্রামে ফিরে এলে সবাই তাদেরকে স্বাগত জানায়। পাশাপাশি প্রকিপ সামাজিকভাবে ইসলামি শরীয়াহ মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন করেন।