অল্পের জন্য বাঁচলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান
ইয়েমেনের সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত বৃহস্পতিবার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সে সময় ওই বিমানবন্দরে ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রস আধানম গেব্রেইসুস। তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন। তার সঙ্গে জাতিসংঘের কয়েক কর্মীও ছিলেন। গতকাল শুক্রবার এ খবর দেয় বিবিসি।
পরিস্থিতি বর্ণনা করে সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মহাপরিচালক জানান, উড়োজাহাজে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা। এমন সময় বিমানবন্দরে বোমাবর্ষণ শুরু হয়। তিনি আরও বলেন, ‘বিমানবন্দরে দুজন নিহত হয়েছেন। আমাদের বিমানের একজন ক্রু আহত হয়েছেন। তবে তিনি নিরাপদে আছেন।’ সানা বিমানবন্দরে হামলায় আহত কয়েকজন ব্যক্তি হুতি নিয়ন্ত্রিত সম্প্রচার মাধ্যম আল মাসিরাহকে বলেন, রানওয়েতে তিনবার আঘাত হানা হয়েছিল, এরপর বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারেও হামলা করা হয়।
ড. আব্বাস রাজেহ নামে একজন ব্যক্তি জানান, তিনি যে পুলিশ হাসপাতালে কাজ করেন, সেখানে হামলার পর ১০ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। একজন ইতিমধ্যে মারা গেছেন, আরেকজনের অবস্থা গুরুতর। বাকিরা অল্প আঘাতপ্রাপ্ত বা হাড় ভাঙার মতো ক্ষত নিয়ে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো জানায়, বৃহস্পতিবারের হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং ১২ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। হতাহতের মধ্যে বেসামরিক লোকজন নাকি হুতি বিদ্রোহীরা রয়েছে, তা জানা যায়নি। এ আক্রমণকে বর্বর বলে অভিহিত করেছে ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।
এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে তাদের যুদ্ধবিমানগুলো হামলা চালিয়েছে। ইয়েমেনের অভ্যন্তরে এবং পশ্চিম উপকূলে হুতি সন্ত্রাসী শাসনের সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
আইডিএফ আরও জানায়, সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হেজিয়াজ ও রাস কানাতিব বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত আল-হুদায়দা, সালিফ ও রাস কানাতিব বন্দরে হামলা চালানো হয়। হামলার পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইরানি অশুভ অক্ষের সন্ত্রাস নামক বাহুটি কেটে ফেলতে হবে।
যতক্ষণ না সম্পূর্ণ নির্মূল হয়, আমরা এ কাজ চালিয়ে যাব। আমরা কেবল (হুতিদের সঙ্গে) শুরু করেছি।’ হুতিদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ আলি আল–হুতি এসব হামলাকে ‘বর্বর’ ও ‘আক্রমণাত্মক’ বলে অভিহিত করেন। তিনি আরও বলেন, ‘গাজায় সংঘাত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমেরিকান ও ইসরায়েলি ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে।’ ইরান এই হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
গত বছরের অক্টোবরে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধে হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে হুতি বিদ্রোহীরা। গত সপ্তাহে হুতিদের একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ১২ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। এ হামলার জবাবে ইয়েমেনে হুতিদের লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।