অখণ্ড ভারত রাষ্ট্রের স্বপ্ন কোনো দিন পূরণ হবে না: আলতাফ চৌধুরী
অখণ্ড ভারত রাষ্ট্র করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন থেকে যাবে, ভারতের এই স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। আজ শুক্রবার সকালে পটুয়াখালীর শেরে বাংলা সড়কের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ভারতের অখণ্ড ভারত রাষ্ট্র করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন থেকে যাবে। এ স্বপ্ন কখনো বাস্তবে রুপ নেবে না। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে খণ্ড খণ্ড করার দুঃসাহস দেখিয়ে দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব না বাড়ানো জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানাই। মহান বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভারতের বিজয় বলে দেওয়া স্ট্যাটাসকে প্রত্যাখ্যান করি। আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই সমমর্যাদার ভিত্তিতে।’
লিখিত বক্তব্যে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার প্রেত্মারা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দেশকে বিপদে ফেলানো চেষ্টা চলছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাড়াতে হবে। ভারত বিগত ৫৩ বছরে আমাদের বন্ধুত্ব-আমাদের কৃতজ্ঞতাকে তারা তাদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই, আমাদের খারাপ সম্পর্ক মোদি সরকারের সঙ্গে। নেহেরুর আমল থেকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল ও ভূটানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো ছিল। শহীদ প্রেসিডিন্ট জিয়াউর রহমান সার্কের মাধ্যমে তা আরও শক্তিশালী করেছিলেন। কিন্তু মোদী সাহেবের আমলে তার হিন্দুত্ববাদ কায়েমের জন্য সবার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। ’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোর আদলে আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে স্পেশাল ফোর্সেস র্যাব গঠন করেছিলাম। তারা তাদের কর্মকাণ্ডে দেশব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। কিন্তু বিগত সরকার ১৫ বছরে র্যাবকে একটি কিলার বাহিনীতে পরিনত করেছিল। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের সংস্কার কমিশনের কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে র্যাব বিলুপ্তির যে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে আমি সহমত পোষন করি। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের হৃদয় এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির অভিধান থেকে আওয়ামী লীগের নাম মুছে গেছে। আওয়ামী লীগের হাতে রচিত হয়েছে গণতন্ত্র হত্যার কলঙ্কিত অধ্যায়। আর এই গণতন্ত্রের পথে যাত্রায় আমাদের আগামী দিনের লক্ষ একটি অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন।’
বর্তমান প্রধান উপদেষ্টার প্রসংসা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদে যারা রয়েছেন তারা শিক্ষিত, প্রাজ্ঞ এবং নিজেদের জীবনে সফল মানুষ। তারা আগামী দিনে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেবে বলে আশা করি। আগামী দিনের দেশ নায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষাক্ত জাল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তারেক রহমানকে বরণ করার জন্য বাংলাদেশের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আগামীর বাংলাদেশ তারেক রহমানের হাত ধরে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে বলে।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি নেতা মাকসুদ আহমেদ বায়েজিদ পান্না মিয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট এটিএম মোজাম্মেল হোসেন তপন, মহিলা দলের অধ্যাপিকা লায়লা ইয়াসমীন, বিএনপি নেতা অধ্যাপক গোলাম রহমান, যুবদল নেতা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান রুমি, এডভোকেট আল আমীন সুজনসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
