সাংবাদিক ও কর্নেল পরিচয় দিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার দুই যুবক

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:২৬
শেয়ার :
সাংবাদিক ও কর্নেল পরিচয় দিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার দুই যুবক

লক্ষ্মীপুরে ভুয়া পরিচয় দিয়ে জনতার গণধোলাই খেয়েছেন আল মাজেদ সিয়াম ও সৌরভ নামের দুই যুবক। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা শহরের ওয়েলকাম চাইনিজ রেস্টুরেন্টের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, গাড়ি পার্কিং করতে নিষেধ করায় রেস্টুরেন্টের পাশের ভবনের মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান দুই যুবক। তখন মেট্রো টিভি নামে একটি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দেন সিয়াম। তার সঙ্গী সৌরভ নামের যুবক নিজের পরিচয় দেন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল। একপর্যায়ে তারা প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে শুরু করেন গালমন্দ। এ সময় ভবনমালিকের ছেলে অধ্যাপক দিদার আহমেদ তাদের গালমন্দ করতে নিষেধ করে। এতে তারা দিদারকে কিল-ঘুষি দিয়ে আহত করেন।

ওই পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে এবং দুই যুবকের যথাযথ পরিচয় জানতে চান। ভুয়া পরিচয় পুনরায় দিলে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের গণধোলাই দেন। এতে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সিয়াম গুরুতর আহত হলেও সটকে পড়েন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল পরিচয় দেওয়া সৌরভ।

স্থানীয়রা আরও জানান, ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া আল মাজেদ সিয়াম আগেও ভুয়া সমন্বয়ক পরিচয়ে ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’ এসেছেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত সিয়াম রায়পুর পৌরসভার বাসিন্দা। অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল পরিচয় দেওয়া সৌরভ একজন যুবলীগ নেতা। সন্ত্রাসী এ কে এম সালাউদ্দিন টিপুর ঘনিষ্ঠজন তিনি। সৌরভের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার আলোনিয়া। রায়পুরে নানার বাড়িতে থেকে জেলা যুবলীগের টিপুর অস্ত্রবাহক ও আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন তিনি। সিয়ামকে গণধোলাই দিয়ে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সবুজের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ভুক্তভোগী অধ্যাপক দিদার বলেন, ‘সৌরভ ও সিয়ামের পরিচয় আমরা ঘটনার পর নিশ্চিত হয়েছি। গাড়ি পার্কিং নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডায় সিয়াম নিজেকে মেট্রো টিভির সাংবাদিক এবং সৌরভ নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দেন। তারা গালমন্দ করে মারধর করলে স্থানীয় জনতা সিয়ামকে গণধোলাই দেন। এ সময় সৌরভ ও তাদের সঙ্গে থাকা আরও তিনজন পালিয়ে যান। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিয়াম ও সৌরভকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাসার ঠিকানায়ও তাদের সন্ধান মেলেনি।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোন্নাফ বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। আমার থানা থেকে ফোর্স গেছে। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’