প্রসাব করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় দুই কিশোরকে হত্যা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৫১
শেয়ার :
প্রসাব করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় দুই কিশোরকে হত্যা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে দুই কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পেয়ারা বাগানে প্রসব করার ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় ওই দুই কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জনায় পুলিশ। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- উপজেলার মাসুদ ও রায়হান। এ ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও ৪ জন। এদের মধ্যে সুমন নামের একজন গুরুতর আহত হয়। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন- আজিজুল হক (৫২) ও তাসিম (৩২)।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ জানান, প্রাথামিকভাবে জানা গেছে ১২ থেকে ১৫ দিন আগে নাচোল উপজেলার মল্লিকপুরে আব্দুল খালেকের পেয়ারা বাগানে পলিথিন (পিপি) লাগানোর কাজ করছিল শ্রমিক সরদার সালাম ও শাহীন। একপর্যায়ে শাহীন শ্রমিক সরদার সালামের প্রসাব করার ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। এই ঘটনার জেরে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল।  

গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে মল্লিকপুর গুরুহাটে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংঘের উদ্যোগে বিজয় দিবসের পুরষ্কার বিতরণী ও সাংস্কৃকিত অনুষ্ঠান চলছিল। এ সময় কিশোর গ্যাং নেতা সালাম তার দলবল অনুষ্ঠান দেখতে আসে। সেখানে আগে থেকে অত পেতে থাকা অপর কিশোর গ্যাং নেতা শাহীন তার সঙ্গীদের নিয়ে অতর্কিতভাবে সালাম ও তার দলবলের ওপর হামলা চালায়। এই অবস্থায় উপস্থিত মানুষ দুই দলকে নিবৃত্ত করে।

একপর্যায়ে তারা পাশ্ববর্তী মাছবাজার টিনশেডের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়ে পরে। এ সময় ৬ জন ছুরিকাঘাতে আহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে কিশোর মাসুদ ও রায়হান নিহত হয়। গুরুত্বর আহত সুমনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্য তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে মাসুদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেনকি ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছিল এবং সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। যদিও এ বিষয়ে দলীয়ভাবে কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। 

দেওয়ালে জয় বাংলা স্লোগান লিখাকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহিদ বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পায়নি। জয় বাংলা লিখাকে কেন্দ্র করে কোনো ঘটনাও ঘটেনি। এই ঘটনায় আমরা দুই জনকে আটক করেছি। আরও ৭ থেকে ৮ জন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। জড়িতদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।’