স্ত্রীর বড় বোনের ঘনিষ্ঠ ছবি ফেসবুকে পোস্ট, নম্বর ব্লক করতেই খুন
স্ত্রীর বড় বোন খাদিজা বিবিকে নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের বাসিন্দা আতিউর লস্কর। সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গিয়ে একান্তে সময় কাটানোর ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করেন আতিউর। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ভগ্নিপতির নম্বর ‘ব্লক’ করে দেন খাদিজা। আর এরই জেরে দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট কলোনির একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে তাকে খুন করা হয়। গল্ফগ্রিন এলাকা থেকে ওই নারীর কাটা মাথা উদ্ধারের পাশাপাশি চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, ফেসবুকে প্রকাশ করা ছবিগুলো খতিয়ে দেখছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। যে নির্মাণাধীন বাড়ির পেছন দিক থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই বাড়িটিতেই খাদিজা বিবিকে হত্যা করে মরদেহটিকে কেটে তিন টুকরো করেন আতিউর। মাথা বাদে শরীরের উপরিভাগ ও পায়ের অংশ আলাদা দুটি বস্তায় ভরে গভীর রাতেই ওই বাড়ির পেছন দিকে ফেলে দেন তিনি।
গত শুক্রবার ভোররাতে খাদিজার কাটা মাথাটি প্লাস্টিকে মুড়িয়ে গ্রাহাম রোডের আবর্জনা ফেলার জায়গায় ফেলে দেন আতিউর। পরে তদন্ত শুরু করে আতিউরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
পুলিশের কাছে আতিউর স্বীকার করেন যে, খাদিজার সঙ্গে তার স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। আতিউর খাদিজার ছোট বোনের স্বামী। এক মাস আগে তাঁরা কয়েকদিনের জন্য দিঘায় বেড়াতে যান। সমুদ্রের ধারে দুজনে মিলে প্রচুর ছবি তোলেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে খাদিজাকে কিছু না জানিয়েই ফেসবুকে ছবিগুলো পোস্ট করে দেয় আতিউর।
সেই ছবিগুলো দেখার পরই আতিউরের স্ত্রী অর্থাৎ বোনের সঙ্গে খাদিজার প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। এর পরই আতিউরের নম্বর ব্লক করে দেন খাদিজা। এমনকি, পুরনো সিমকার্ড ফেলে দিয়ে নতুন সিমকার্ডও কেনেন তিনি।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
কয়েকদিন ধরে খাদিজার সঙ্গে আতিউরের কোনো যোগাযোগ ছিল না। আতিউর যে ডেভেলপারের অধীনে রঙের মিস্ত্রির কাজ করতেন, সেই ডেভেলপারের এক আত্মীয়ের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন খাদিজা। ওই আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আতিউর খাদিজার নতুন নম্বর জোগাড় করেন।
পরে খাদিজাকে ফোন কের ক্ষমা চান আতিউর। তাতে খাদিজার ক্ষোভ কমলে তাকে আতিউর ডেকে পাঠান। কথা বলার জন্য অনেকটা জোর করেই খাদিজাকে রিজেন্ট কলোনির নির্মাণাধীন বাড়িটিতে নিয়ে যান। ওই বাড়িটিও সেই একই ডেভেলপার তৈরি করছেন। গত বৃহস্পতিবার বাড়িটিতে কেউ ছিলেন না। ওই নির্জন বাড়িতে খাদিজাকে ফের ঘনিষ্ঠভাবে পেতে চান আতিউর। কিন্তু পুরোনো প্রসঙ্গ তুলে দুজনের মধে্য ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে খাদিজার মাথায় আঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলাটিপে ধরেন আতিউর। পরে রঙ করার পাত দিয়ে মরদেহটি টুকরো করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস