‘প্রশাসনে হাসিনার পোকামাকড় রেখে দিলে দেশ এগিয়ে নেবেন কীভাবে?’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) প্রশাসনে শেখ হাসিনার পোকামাকড় রেখে দিলে দেশ এগিয়ে নিতে যেতে পারবেন কীভাবে? নারায়ণগঞ্জে যে এসপির গুলিতে আন্দোলনকারী শাওনকে হত্যা করা হলো তাকে প্রমোশন দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসলেন। তাহলে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হত্যা বন্ধ করবেন কীভাবে? যে পুলিশের কারণে রাজপথ রক্তাক্ত হয়েছে উল্টো তাদের ভালো পোস্ট দিলে বর্তমান সরকার এবং পরবর্তীতে যারা আসবে তাদের জন্য ক্ষতিকর।’
আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল মহানগর উত্তরের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার এখনো দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘ সরকার পতিত স্বৈরশাসকের বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। তাদের চিহ্নিত করুন, মধ্যসত্ত্ব ভোগীদের আইনের আওতায় আনুন। রাস্তায় রাস্তায় এখনো গাড়িতে চাঁদাবাজি করছে। বিএনপি এসব বন্ধের চেষ্টা করতে পারে, কিন্তু বন্ধ করতে পারবে না। এর দায়িত্ব সরকারের।’
তিনি বলেন,‘সরকার এসব প্রতিহত করার চেষ্টা করলেও উদ্যম কম। জনগণ যদি আগের চেয়ে স্বস্তিতে থাকতে না পারে তাহলে হতাশ হবে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
‘অগ্রগতি যে একেবারে হয়নি আমরা তা বলছি না’ উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এখন বক্তৃতা করে বাসায় যেতে পারছি। আমাদেরকে এখন পুলিশ ধরছে না, গোয়েন্দা পুলিশ খুঁজছে না, হ্যাঁ এটা হয়েছে। এ ধরনের কথা আপনারা বললে মানুষ অন্যকিছু ভাববে। ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনের পুনরুত্থান হবে।’
কৃষক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘কৃষক দল বাজার দরে কৃষিদ্রব্য কিনে কম মূল্যে বিক্রি করছে। বগুড়া থেকে কম মূল্যে বীজ কিনে কুড়িগ্রামে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করছে। এর জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে কৃষক দলকে ধন্যবাদ জানাই। এখন আন্দোলন নেই, কিন্তু বিএনপির কেউ বসে নেই। জনস্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে।’
গণস্বার্থকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দল গড়ে উঠে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের পর গঠিত সরকার দেশের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছেন। আমরা সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। আবার অনেক কাজের সমালোচনাও করছি। সমালোচনা মানে এই নয় যে আমরা এ সরকারের বিরোধিতা করছি, পতন দাবি করছি।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তিনি বলেন, ‘একজন উপদেষ্টা বলেছেন ৫০ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো কিছুই করতে পারেনি, আমরা করছি। তাহলে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এবং ২৪-এর সফলতা কে এনেছে? এগুলো কি সুশীল সমাজের অবদান? হ্যা তারা সমর্থন করেছে। ৩শ শতাব্দী থেকে ভোটের প্রথা চালু হয়েছে। ৮শ বছর আগে ইংল্যান্ডে অধিকারের আন্দোলন শুরু হয়েছে। বড় বড় উন্নত দেশেও রাষ্ট্রের সংস্কার কখনো রাজনীতিবিদদের অবসর দিয়ে হয় না।’
সংস্কার নিয়ে জনৈক উপদেষ্টার উক্তি সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘এটি অহমবোধের অভিব্যক্তি। একটি রাষ্ট্রকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যাওয়ার যে সংস্কার এই সংস্কারতো মনীষীরা চিন্তা করেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোই সেটা বাস্তবায়ন করেছে। প্রকৃত সংস্কার করলে গণতন্ত্রের যে অপরিহার্য অংশ নির্বাচন, আইনের শাসন, বিচার বিভাগ এগুলোর সংস্কার তো বিলম্ব হওয়ার কথা না।’
কৃষক দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আসজাদুল আরিস ডলের সভাপতিত্বে সদস্যসচিব শফিকুর রহমান মিঠুর সঞ্চালনায় শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলক, দপ্তর সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।