শীতের তীব্রতায় কাঁপছে ঢাকা, জবুথবু সারাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০০
শেয়ার :
শীতের তীব্রতায় কাঁপছে ঢাকা, জবুথবু সারাদেশ

পৌষ মাস এখনো আসেনি। এরপরেও রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। ঢাকায় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকলেও উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশেই ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে ওঠা-নামা করছে।

এ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ‘দু-এক দিনের মধ্যেই বয়ে যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। এছাড়া ঘন কুয়াশা থাকবে আরও অন্তত এক সপ্তাহ।’

আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ‘আগামী ১৬ তারিখ থেকে কুয়াশা আরও বাড়বে, থাকবে অন্তত এক সপ্তাহ। দু-একদিনের মধ্যেই বয়ে যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। এ কয়দিন দুপুরের আগে সূর্যের দেখা পাওয়া যাবে না।’

এদিকে দেশের উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর এবং রাজশাহীসহ অন্যান্য জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা দেখা দিয়েছে আগে থেকেই। সেই সঙ্গে দক্ষিণের জেলাগুলোও কাঁপছে প্রবল শীতে।

রংপুর জেলার আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার শীত বেশি পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ ভাগ থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত বয়ে যেতে পারে বেশ কয়েকটি শৈত্যপ্রবাহ।’

জেলা শেরপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের অনেককে এখনও থাকতে হচ্ছে ঝুপড়ি ঘরে। শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে তাদের কষ্ট।

এ এলাকার স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্যায় ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গরমের সময় ঘরের বাইরে কোনোরকমে দিন কাটালেও এখন তীব্র শীতে ভোগান্তি বেড়েছে বহুগুণে। ঘরের বাইরে থাকলে নানা রকম রোগ হচ্ছে। ঠান্ডা, জ্বর আর কাশি হচ্ছে সবারই।

এদিকে নওগাঁয় শীতের তীব্রতা বাড়ার প্রভাব কৃষির ওপর পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে আলু, সরিষা, বোরো বীজতলাসহ বিভিন্ন শাকসবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বিলম্বিত হচ্ছে চলতি মৌসুমের রোপা আমন কাটা আর মাড়াইয়ের কাজ। এ অবস্থায় ফসল রক্ষায় আলু, সরিষা, পেঁয়াজসহ রবিশস্য রক্ষায় ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।’ এছাড়া ইরি-বোরো বীজতলা ঘন কুয়াশার জন্য পলিথিনে মুড়িয়ে বীজতলা পানি দিয়ে ডুবিয়ে রাখার পরামর্শ দেন এই কৃষি কমকর্তা।

সারাদেশে শীত বাড়তে থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। সকাল সকাল ঘর থেকে বের হওয়া ও কাজ পাওয়া কষ্টকর হয়ে গেছে অনেকের জন্য।

স্থানীয় এক অটোরিকশা বলেন, ‘এই শীতে অটোরিকশা নিয়ে বেড়ে হতে হচ্ছে সংসার চালানোর জন্য। কোনোরকমে অটোরিকশা নিয়ে বের হলেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।’

অপরদিকে গোপালগঞ্জের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গায়ও গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এটি। সীমান্তবর্তী এই জেলায় এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে করে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরেই চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ নিম্নগামী। গত মঙ্গলবার এই জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ ডিগ্রি। বুধবার তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।