ভারত থেকে চোরাই পথে আসছে যেসব পণ্য
সিলেট সীমান্তে চোরাচালান থামছেই না। নানা জটিলতায় ভারত থেকে বৈধ পথে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত হলেও চোরাইপণ্য ঢুকছে প্রতিনিয়ত। একইভাবে বাংলাদেশ থেকেও পাচার হচ্ছে নানা পণ্য।
জানা গেছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। নিয়মিত অভিযানে জব্দ হচ্ছে কোটি কোটি টাকার পণ্য। চোরাচালান প্রতিহত করতে গিয়ে চোরাকারবারিদের সশস্ত্র হামলায় আহত হয়েছেন বিজিবি সদস্যরা।
সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চোরাচালানের বেশিরভাগই পার পেয়ে যায়, জব্দ হয় সামান্য অংশ।
ভারত থেকে মদ ও ইয়াবা পাচারের রুট হিসেবে গত কয়েক বছরে বারবার ওঠে এসেছে সিলেটের জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোয়াইনঘাট ও সুনামগঞ্জ সীমান্তের নাম। অবৈধ পথে ভারতীয় গরু-মহিষ পাচারেরও বড় রুট সিলেট সীমান্ত। এ ছাড়া গত দুই বছর সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ পথে আনা চিনিতে সয়লাব হয়েছে দেশের বাজার।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে পাচার হয়ে এ দেশে আসা পণ্যের মধ্যে বিজিবির জব্দের তালিকায় আছে ভারতীয় গরু, গরুর মাংস, চিনি, মদ, ফেনসিডিল, কাপড়, মোটরসাইকেল, ওষুধ, খাদ্যদ্রব্য, প্রশাধনীসহ নানা পণ্য।
একইভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারকালে জব্দ হয়েছে বিপুল পরিমাণ রসুন ও শিং মাছ।
বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বাধীন সিলেট এবং সুনামগঞ্জের বাংলাবাজার, লাফার্জ, লবিয়া, সংগ্রাম, দমদমিয়া সোনারহাট, বিছনাকান্দি, প্রতাপপুর, পান্থুমাই, উৎমা, মিনাটিলা, কালাইরাগ, কালাসাদেক এবং পাথরকোয়ারি বিওপির জোয়ানরা গত দুই মাসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই পণ্য জব্দ করেছে।
চলতি মাসের প্রথম ১১ দিনে সিলেটের সীমান্তে প্রায় ১০ কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি। এর মধ্যে ১০ ও ১১ ডিসেম্বর দুই দিনে প্রায় ২ কোটি, ৯ ডিসেম্বর দেড় কোটি, ৮ ডিসেম্বর ১ কোটি, ৭ ডিসেম্বর ৫০ লাখ, ৩ ডিসেম্বর ১ কোটি এবং ১ ডিসেম্বর প্রায় ২ কোটি টাকার পণ্য জব্দ করার কথা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে বিজিবি।
এর মধ্যে ২ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী মৌলারপারে বিজিবি টহলদল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারকালে ৩ হাজার ২২০ কেজি রসুন জব্দ করে। জব্দ করা মালামাল নিয়ে ফেরত আসার সময় কয়েকশ চোরাকারবারী ধারাল অস্ত্রসহ বিজিবি টহল দলের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুজন বিজিবি সদস্য আহত হন। পরে মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মোবারক হোসেন নামে দুজনকে বিজিবির সহায়তায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সিলেট ব্যাটালিয়নের (৪৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান বলেন, সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। এছাড়া সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা সর্বোতভাবে অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়তই চোরাচালানের মালামাল জব্দ হচ্ছে।