পরিবারের বাধায় উত্তোলন হয়নি আন্দোলনে নিহত সোলাইমানের মরদেহ
পরিবারের বাধায় ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করা যায়নি গণঅভ্যুত্থানে নিহত হাফেজ সোলাইমানের মরদেহ। আজ সোমবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানিনগর কবরস্থান থেকে সোলাইমানের মরদেহ উত্তোলনের জন্য গেলে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে সোলাইমানের মরদেহ উত্তোলনের জন্য মাদানিনগর কবরস্থানে আসেন তদন্তকারী সংস্থা অপরাধ তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক মোসা. হাসিনা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার মো. তামশিদ ইরাম খান।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় গত ৫ আগষ্ট দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সামনে গুলিতে নিহত হয় হাফেজ সোলাইমান। পরবর্তীতে ওই ঘটনায় গত ২২ আগষ্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নিহতের বোন জামাতা শামীম কবির বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি)। তারই প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানি নগর মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থান থেকে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আসে সিআইডি।
এ সময় খবর পেয়ে নিহত সোলাইমানের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন। মরদেহ উত্তোলনে আপত্তি জানিয়ে বাধা দেন তারা। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মামলার বাদী শামীম কবিরসহ পরিবারের লোকদের দুদিন সময় দিয়ে আদালতের মাধ্যমে ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা বলে মরদেহ উত্তোলন না করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের মামলার বাদী নিহত হাফেজ সোলাইমানের বোন জামাতা শামীম কবীর বলেন, ‘মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি থেকে আমাদের সাথে আগে যোগাযোগ করা হয়েছিল মরদেহ উত্তোলনের জন্য। আমরা বরাবরই মরদেহ উত্তোলনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলাম। পরবর্তীতে নিহত সোলাইমানের বাবা মাকে বিষয়টি জানাই। তারাও মরদেহ উত্তোলনের বিষয়ে আপত্তি জানায়। কিন্তু আজকে যে তারা আদালতের মাধ্যমে সকল কাজ সম্পন্ন করে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আসছে সেটা আমাদের জানা ছিল না। আমরা খবর পেয়ে আজকে এখানে আসি। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানাই। তখন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাদেরকে আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি এগিয়ে নেওয়ার কথা জানান।’
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে শামীম কবির বলেন, ‘মরদেহ উত্তোলন ছাড়া যদি কোনো পক্রিয়া থাকে তবে আমরা মামলা চালিয়ে যাব। আর যদি মরদেহ উত্তোলনই করতে হয়, তাহলে আমরা মামলাটি আর চালাব না, প্রয়োজনে প্রত্যাহার করে নেব মামলা।’
এ বিষয়ে দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহকারী কমিশনার মো. তামশিদ ইরাম খান বলেন, ‘নিহতের পরিবারের কাছ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। তাই আমরা তাদেরকে সময় দিয়েছি। উনারা আদালতে যাবেন। আদালতের সিদ্ধান্তে পরবর্তী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক মেসা. হাসিনা বেগম জানান, নিহত সোলাইমানের পরিবার মরদেহ উত্তোলনে রাজী নয়। তাই তারা সময় চেয়েছেন। বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে সমাধানের জন্য তাদের সময় দেওয়া হয়েছে।