বিকল্পধারার প্রবাদপুরুষ তারেক মাসুদ
জন্মদিনে স্মরণ
চলচ্চিত্রে আধুনিক ভাষা ও সমকালীন বিষয়াবলি জোরালোভাবে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ঢাকাই সিনেমার বিকল্পধারার প্রবাদপুরুষ। চলচ্চিত্র ছিল তার মন ও মননে। যুক্তরাষ্ট্রের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে সিনেমার প্রতি ভালোবাসা থেকে স্ট্রাগলের পথ বেছে নিয়েছিলেন এই সিনেমাযোদ্ধা। নিজের বানানো ছবিকে দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে কাদা-মাটি-জল ডিঙিয়ে হেঁটেছেন বহুদূর। ফেরিওয়ালার মতো সিনেমার মাধ্যমে নানারকম বার্তা ফেরি করে গেছেন আমৃত্যু। বলছি তারেক মাসুদের কথা। আজ তার জন্মদিন। বেঁচে থাকলে এবার ৬৮ বছরে পা রাখতেন।
খ্যাতিমান নির্মাতা তারেক মাসুদ ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম নুরুন নাহার মাসুদ ও বাবা মশিউর রহমান মাসুদ। শিক্ষাজীবন থেকেই তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ১৯৮৫ সালে প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সোনার বেড়ী’ নির্মাণ করেন। একই বছরের শেষদিকে নির্মাণ করেন তথ্যচিত্র ‘আদম সুরত’। কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জীবনীর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয় এটি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজ ব্যবহার করে তারেক মাসুদ দুটি তথ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’ নির্মাণ করেন। ‘মাটির ময়না’ তার প্রথম ফিচার চলচ্চিত্র, যার জন্য তিনি ২০০২ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ডিরেক্টর ফোর্টনাইট’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন এবং এটি বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কারে (অস্কার) মনোনীত হয়। তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘রানওয়ে’ মুক্তি পায় ২০১০ সালে।
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট নতুন চলচ্চিত্র ‘কাগজের ফুল’-এর দৃশ্য ধারণের স্থান নির্বাচন করে মানিকগঞ্জ থেকে ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তারেক মাসুদ। দেশীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম এ নির্মাতা ২০১২ সালে (মরণোত্তর) একুশে পদক পান।
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল