২০২৩ সালের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাতের নাম জানাল টিআইবি
২০২৩ সালে জাতীয়ভাবে প্রাক্কলিত ঘুসের পরিমাণ ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ ও জিডিপির ০ দশমিক ২২ শতাংশ।এই পরিমাণ অর্থ দেশের মানুষ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সেবা পেতে ঘুস দিয়েছে। আর সর্বোচ্চ দুর্নীতি ও ঘুসের হার পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায়।
আজ মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে ‘সেবাখাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩’ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
টিআইবির খানা জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, সেবা পেতে খানা বা পরিবারপ্রতি ৫ হাজার ৬৮০ টাকা ঘুস দিতে হয়েছে। গড় ঘুসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বিচারিক সেবা, ভূমি সেবা ও ব্যাংকখাতে। সেবা পেতে ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার দুর্নীতি ও ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার ঘুসের শিকার হয়েছে।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের দুর্নীতির ব্যাপকতা দীর্ঘদিনের। সমাধান, দুর্নীতির নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ারগুলো প্রয়োগ হয় না। বহুমাত্রিক হাতিয়ার হিসেবে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হয় ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে। এর কোনটাই আমাদের দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়নি। যে খাতগুলোতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি নির্মূলের দায়িত্ব, তারাই বেশি দুর্নীতি করছে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে দুর্নীতির শিকার হয়েছে। জড়িতদের জবাবদিহিতায় আনা হয় না বলেই দুর্নীতির চিত্র বাড়ছে।
২০২৩ সালে সার্বিকভাবে খানাগুলো গড়ে পাঁচ হাজার ৬৮০ টাকা ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত অর্থ দিতে বাধ্য হয়েছে: গড় ঘুষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বিচারিক সেবা, ভূমি সেবা ও ব্যাংকিং খাতে। ২০২৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে প্রাক্কলিত মোট ঘুষের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশের জিডিপি’র শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ।
টিআইবির খানা জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ (এপ্রিল) পর্যন্ত সেবাখাতে জাতীয় পর্যায়ে মোট ঘুষের ন্যূনতম প্রাক্কলিত পরিমাণ এক লাখ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা।বিচারিক সেবা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় দুর্নীতি ও ঘুষের উচ্চ হার অব্যাহত, যা সাধারণ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় বাধা।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
অন্যদিকে ভূমি সেবা, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বিআরটিএ’র মতো সেবায় উচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষ বিদ্যমান, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বাংলাদেশে দুর্নীতি নির্মূলে এই অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে যদি যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে দুর্নীতি কমিয়ে আনতে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে বলেও জানান টিআইবি নির্বাহী পরিচালক।