মহালুটপাটের ভয়ংকর চিত্র /
কালো অর্থনীতির শ্বেতপত্র যাচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার হাতে
আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন ও দুর্নীতিতে লণ্ডভণ্ড দেশের অর্থনীতি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অর্থনীতির ক্ষত ও পরিস্থিতি পরিমাপ করতে একটি কমিটি করে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের সচিব, ব্যবসায়ী, নাগরিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে তিন মাস আলোচনা, পর্যালোচনা, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাইয়ের পর এসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। যা আজ রবিবার প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, দুর্নীতিবাজ ধরতে নয় বরং অনিয়ম-দুর্নীতির পথ বন্ধে করণীয়, সেইসঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে বর্তমান অর্থনীতির ক্ষত। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চিহ্নিত সমস্যা সমাধান করতে না পারলে কোনো সুফল দেবে না শ্বেতপত্র।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি, নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে মন্দাভাবকে এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। এমন অবস্থায় আজ প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে দেশের কালো অর্থনীতির শ্বেতপত্র। যেখানে থাকবে কেন এমন নাজুক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি আর সেখান থেকে উত্তরণের উপায় কী।
জানা গেছে, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি কোনো দুর্নীতি ধরবে না, দুর্নীতির মাত্রা মূল্যায়ন করবে। বিশেষভাবে খতিয়ে দেখা হয় হাসিনা সরকারের আমলে জ্বালানি খাতে যত চুক্তি হয়েছে, সেখানে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি-না। আলোচনা হয়েছে অর্থ-সম্পদ পাচার ও তা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটিকে সরকারি ২৪ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভুল তথ্যে সাজানো হয়েছে বিগত সরকারের উন্নয়ন দর্শন।
গত ২ অক্টোবর সিলেটে এক বৈঠক শেষে শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান জানান, বৈষম্য দূরীকরণ ও সংস্কারের বিষয়ে তথ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাই কমিটির কাজ। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ৮৫ জন কর্মকর্তা শ্বেতপত্র কমিটিকে জানিয়েছেন হাসিনা সরকারের আমলে রাজনীতির কাছে জিম্মি ছিল আমলাতন্ত্র-অর্থনীতি।
শ্বেতপত্রে থাকছে জ্বালানি খাতে লুটপাটের চিত্র। সবশেষ গত ২৮ নভেম্বর ড. দেবপ্রিয় জানান, আগামীকাল সোমবার আর্থিক খাতের লুটপাটের ফিরিস্তি তুলে ধরবে অন্তর্বর্তী সরকার। ব্যাংক ও জ্বালানিখাতে বেশি লুটপাট হয়েছে। এসব তুলে ধরা হবে প্রতিবেদনে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শ্বেতপত্রে তুলে ধরা সমস্যা সমাধান করাই হবে সরকারের সাফল্য।
অর্থনীতিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে গত ১৫ বছরে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। আগেও সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছিল; কিন্তু সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্তমান সরকারকে শ্বেতপত্রে তুলে ধরা সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।’
এর আগে, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে গত ২৮ আগস্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়।