শিবচরে কার্যক্রম বন্ধ করে কার্যালয় ছাড়লেন ইসকন সদস্যরা
মাদারীপুরের শিবচরে বিক্ষোভের মুখে কার্যক্রম বন্ধ করে কার্যালয় ছেড়েছেন ইসকন সদস্যরা। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিবপুর থানা পুলিশের পাহারায় প্রাইভেটকারে তারা কার্যালয় ছেড়ে যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে শিবচর পৌরসভার টিএন্ডটি রোড এলাকার বিনয় মালোর মালিকানাধীন সোনালী মার্কেটের ভাড়া বাসায় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসেছে ইসকন। চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যার প্রতিবাদে বুধবার সকালে শিবচরের ইসকন অফিসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় আলেম সমাজ। ইসকন সদস্যদের কার্যলয় থেকে চলে যেতে আধাঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তারা।
খবর পেয়ে পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। বিক্ষুদ্ধরা ইসকনের সদস্যদের অফিস ত্যাগসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানান। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অফিস গুটিয়ে না নিলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। একপর্যায়ে ইসকন সদস্য কানাই, নন্দ, ননী গোপাল পুলিশ পাহারায় প্রাইভেটকারে নিরাপদ স্থানে চলে যান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ জাফর আহমাদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে ধ্বংস করার পায়তারা করছে জঙ্গী সংগঠন ইসকন। আমরা সন্ত্রাসী নামেই এই সংগঠনকে চিনি। ইসকন গতকাল একজন আইনজীবীকে হত্যা করেছে, মসজিদে হামলা করেছে। দেশে প্রায় ৯২ ভাগ মুসলমান থাকা সত্বেও কেউ বলতে পারবে না আমরা কোনো ধর্মের মানুষের ওপর হামলা করেছি। শিবচরে ইসকনের অফিস রয়েছে, সেখানে তাদের সদস্যরা থাকেন এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। প্রশাসন আমাদের কাছ থেকে আধা ঘণ্টা সময় নিয়েছে। আমাদের দাবি, ইসকনের সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে হবে। এই অফিস বন্ধসহ সদস্যদের স্থায়ীভাবে এখান থেকে চলে যেতে হবে।’
ইসকনের শিবচর শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য কানাই দাশ মুঠোফোনে বলেন, ‘বেলা ১২ টার দিকে তিন জন আলেম মন্দির ও অফিস কক্ষে এসে আমাদের ৩০ মিনিট সময় বেঁধে দেয়। তারা বলে, আধা ঘণ্টার মধ্যে যদি মন্দিরের কর্যক্রম বন্ধ না করি, তাহলে অবস্থা খারাপ হবে। তারা জড়ো হতে থাকলে আমরা পুলিশ আর সেনাবাহিনীকে জানাই। তারা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের সরে যেতে বললে আমরা মন্দির ও অফিস থেকে তিন জন সদস্য সবকক্ষে তালা দিয়ে বের হয়ে আসি।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপসহকারী (এসআই) গুলজার হোসেন (মুঠোফোনে) বলেন, ‘ইসকনের সদস্যরা ওখানে ছিল। বিরাজমান অবস্থা নিয়ে ওখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ওনারা (ইসকনসাধুরা) আমাকে পার করে দিয়ে আসতে বললে, আমি তাদের পার করে দিয়ে আসছি।’
মাদারীপুরের শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকতার হোসেন বলেন, ‘শিবচরে ইসকনের একটা অফিসে আলেম সমাজের লোকজন এসেছিল। সেখানে ইসকনের ৩ জন সদস্য ছিল। তাদের বাড়ি শরীয়তপুর। আলেম সমাজের উপস্থিতি হওয়ার পর ইসকন সদস্যরা চলে যান। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’