‘সরকারের কেউ এমন কথা বলবেন না, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:১২
শেয়ার :
‘সরকারের কেউ এমন কথা বলবেন না, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার কারও দয়ায় নয়; এই সরকার এ দেশের ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে গঠন করা হয়েছে।  যারা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন, তারা দয়া করে এমন কোনো কথা বলবেন না যা জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। ’  

শহিদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে ‘স্বৈরাচার পতন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাষ্ট্র গঠনে চিকিৎসক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা আমাদের জন্য শান্তিময় উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশে বসবাসের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, আত্মত্যাগ করেছেন, জীবন দিয়েছেন, তাদের কথা যখন আমরা স্মরণ করি, আমরা স্বভাবতই তারা কী কাজ করেছেন, কী কারণে দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন সেগুলো মনে করার চেষ্টা করি। সেই নক্ষত্রগুলোর একজন ডা. মিলন। যারা দেশ, দেশের মানুষ, গণতন্ত্র ও বাক্‌-স্বাধীনতার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। ’

‘৭১ মুক্তিযুদ্ধ, ‘৯০ গণঅভ্যুত্থান সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রতিবার কিছু তরুণ-যুবক দেশে পরিবর্তন আনার জন্য প্রাণ দিচ্ছেন। কখনো স্বাধীনতার জন্য, কখনো গণতন্ত্রের জন্য, কখনো দেশের কল্যাণের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, সেই সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে নতুন একটি সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে, নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যে বাংলাদেশের মানুষেরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘ ১৫ বছর লড়াই করেছে, কারাগারে গেছে নির্যাতিত হয়েছে, সেই মানুষগুলো অতি সম্প্রতি গত ৫ আগষ্ট তারা আরেকটি বিজয় অর্জন করেছে। সে বিজয় অর্জনও অনেক রক্তের মধ্য দিয়ে। অনেক প্রাণের ভেতর দিয়ে। আমাদের ছাত্রদের বুকের রক্তে ভেসে গেছে রাজপথ, আমাদের শিশুদের বুকের রক্তে লাল হয়ে উঠেছে মায়ের আঁচল। ’

তিনি বলেন, ‘ভাবুন, কী পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করলে একজন মানুষ তার দেশ ও দেশের কল্যাণের জন্য প্রাণ দিতে পারে। এটাই দেশপ্রেম, এটাই বুঝি মাতৃভূমির জন্য ভালোবাসা। এটা তো আমাদের দেশের মানুষ বারবার দেখিয়েছে। ’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কিন্তু আজকে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠে গেছে, এত যে প্রাণ গেল, প্রাণ দিল, আমরা যে এত প্রাণ দিলাম- তার ফলোশ্রুতি কি এই বাংলাদেশ? আমরা কি এটাই দেখতে চেয়েছি যে- তিন মাসও হয়নি এখনই রাস্তায় রাস্তায় লড়াই হচ্ছে, একে অন্যের বুকের রক্ত ঝরাচ্ছে, পত্রিকা অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, আক্রমণ করছে। এ কোন বাংলাদেশ?’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ কেন ভয়াবহ এই বিভাজন, হিংসা, অস্থিরতা, কোথায় সমস্যা? আর কত বিভাজন ও ঘৃণা নিয়ে আমরা বাংলাদেশকে টেনে ওপড়ে তোলার চেষ্টা করব?বারবার টেনে ধরা হবে, আবার পড়বে ঘৃণা ও মিথ্যা নিয়ে। দানবীয় শক্তি নিয়ে আবার উঠবে; আবার পড়বে?’

ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের সাবেক সভাপতি এ কে এম আজিজুল হক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।