ঋণের টাকা পরিশোধ করা লাগবে না ভেবে ভায়রাকে হত্যা

রাজশাহী ব্যুরো
২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৩
শেয়ার :
ঋণের টাকা পরিশোধ করা লাগবে না ভেবে ভায়রাকে হত্যা

ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে না ভেবে ভাইরা আনিসুর রহমানকে গলা কেটে হত্যা করেন মো. রায়হান আলী (৪০)। গতকাল রবিবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে রায়হান এ কথা জানান।

গতকাল রবিবার বিকেলে রাজশাহীর বাঘা থানার আমলি আদালতে ভায়রা আনিসুর রহমানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন রায়হান। এ সময় তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।

এর আগে গত শুক্রবার রাতে উপজেলার মনিগ্রামের একটি আমবাগানে রায়হান বাকপ্রতিবন্ধী ভায়রা আনিসুর রহমানকে গলা কেটে হত্যা করেন। নিহত আনিসুর রহমান (৪২) তুলশীপুর গ্রামের বাসিন্দা।

রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, নিহত আনিসুর রহমানের স্ত্রী পারভীনা বেগমের ছোট বোনের স্বামী রায়হান। রায়হান রডমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। আর্থিক সমস্যায় বিভিন্ন সময় আনিসুরের কাছ থেকে টাকা ধার করতেন রায়হান। চার মাস আগে রায়হান ক্ষুদ্রঋণ দানকারী প্রতিষ্ঠান গাক নামে একটি এনজিও থেকে আনিসুর ও তার স্ত্রী পারভীনা বেগমের নামে ৯০ হাজার টাকা ঋণ তোলেন। নিজের নামে আগে থেকেই নেওয়া ঋণ ও আনিসুরের মাধ্যমে নেওয়া ঋণের কিস্তি ৯ হাজার টাকা দিতে গিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। এরমধ্যে গত বুধবার পারভীনা বেগম ৫ হাজার টাকা ধার চান রায়হানের কাছে। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

এ অবস্থায় কিস্তির টাকা পরিশোধ নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। পরে লোকমুখে শুনতে পান, ঋণ গ্রহীতা দুজনের মধ্যে কোনো একজন মারা গেলে পুরো টাকা মওকুফ হয়ে যায়। এরপরই রায়হান তার ভাইরা আনিসুরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

সহকারী পুলিশ সুপার আরও জানান, রায়হান বাজার থেকে ৫০ টাকা দিয়ে একটি ছুরি কেনেন। গত শুক্রবার রায়হান ফোন করে ভায়রা আনিসুরকে মনিগ্রাম বাজারে ডাকেন ৫ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য। কথামত বাজারে গেলে টাকা ধার দেওয়ার নাম করে রাতে আনিসুরকে বাজারের পাশের একটি আম বাগানে নিয়ে যান রায়হান। পরে কথা বলার এক ফাঁকে রায়হান পিছন দিক থেকে আনিসুরের গলায় ছুরি চালান। এতে আনিসুর ঘটনাস্থলেই মারা যান।

তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে রায়হানের কথায় গড়মিল পাওয়া গেলে তাকে আটক করা হয়। একপর্যায়ে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। রবিবার আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দেন রায়হান। এ ঘটনায় আনিসুরের স্ত্রী পারভীনা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন।