আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে নিরপেক্ষ হওয়ার চেষ্টা করবেন না
অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম। বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান। মহানগরীর বাটার মোড়ে এই সমাবেরেশর আয়োজন করে জেলা ও মহানগর বিএনপি।
আব্দুস সালাম বলেন, ‘আপনাকে আমরা এনেছি। হাসিনাকে বিদায় করে, অভুত্থানের পরে এই অন্তর্বর্তী সরকার আমরা এনেছি। তাই নিরপেক্ষতার নামে আওয়ামী লীগ যাতে পুনর্বাসিত না হয়, সেইদিকে কিন্তু জনগণ খেয়াল রাখছে।’
সমাবেশে আব্দুস সালাম আরও বলেন, ‘আজ আমাদের শপথ নেওয়ার সময় এসেছে। শপথ নিতে হবে গত ১৫ বছর ভারতীয় যেই তাবেদার সরকার ক্ষমতায় ছিল, ক্ষমতায় থেকে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। সেই তাবেদার সরকার আর যাতে ফিরে না আসতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিদায় হলেও দেশে গণতন্ত্র ফেরেনি; শেখ হাসিনা বিদায় হইছে, এখনও কিন্তু গণতন্ত্র ফিরে আসেনি। শেখ হাসিনা বিদায় নিছে, এখনো আমাদের নেতা তারেক রহমান ফিরে আসে নাই। তাই এই সরকারকে বলব নিরপেক্ষ সরকার হওয়ার চেষ্টা কইরেন না। নিরপেক্ষ সরকার না আপনি। আপনাকে আমরা এনেছি।’
আওয়ামী লীগের নেতারা কীভাবে ভারতে পালাচ্ছেন, সে প্রশ্ন তুলে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আজকের প্রশ্ন করতে চাই রাজশাহীতে। রাজশাহীর যে অবৈধ মেয়র ছিল, জোর করে ক্ষমতা দখলকারী, সেই লিটন আজকে কোথায়? কোথায় আছে এখন? ও পালাইছে। গ্রেপ্তার হয় নাই। এই সরকারকে বলি, ভারতীয় সরকারকেও বলি সীমান্তে কৃষককে হত্যা করা হয়, শ্রমিককে হত্যা করা হয়, ফেলানিকে হত্যা করে তারকাটায় ঝুলাইয়া রাখা হয়। আর সীমান্ত পার হয়ে এই আওয়ামী লীগের হোমড়া-চোমড়ারা কীভাবে আজকে ভারতে যাচ্ছে, এই সরকারের কাছে আমরা জিজ্ঞাসা করতে চাই। আজকে ভারতকেও জিজ্ঞাসা করতে চাই। তাই বলব, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।’
দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব জিনিসপত্রের দাম কমান। চাল, ডাল, তেল, লবণের দাম কমান। এখন উপদেষ্টাদের দেখি, তারা প্রায় আড়াইশো স্টেডিয়াম বানানোর পরিকল্পনা করে। স্টেডিয়াম বানানোর কাজ আপনাদের না। আপনাদের কাজ দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করা।’
গণতন্ত্র রক্ষায় নেতাকর্মীদের লাঠি প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দিয়ে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আপনারা ১৭ বছর ধৈর্য্য ধরেছেন। আরও কয়েক মাস একটু ধৈর্য্য ধরেন। ধৈর্য্য ধরা মানে এই না যে রাজপথ ছেড়ে দিতে হবে। ধৈর্য্য ধরা মানে এই না যে লাঠিটা আওয়ামী লীগকে মেরেছিলেন, ওই লাঠিটা ফেলে দিতে হবে সেটা না। ওই লাঠিটা স্বযত্নে রাখবেন। যতি আবার গণতন্ত্র ভুলণ্ঠিত হওয়ার জন্য কেউ ষড়যন্ত্র করে, ওই ষড়যন্ত্রকারীর মাঠে লাঠি ভাঙার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ইশা। সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ সমাবেশ পরিচালনা করেন। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, কেন্দ্রের সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, দেবাশিষ রায় মধু, রাজশাহী নগরের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানাসহ আরও অনেকে।