ইমরুলের আক্ষেপ ও সুখস্মৃতি নিয়ে বিদায়

সাদা পোশাক ফেলে গেলেন পেছনে

ক্রীড়া প্রতিবেদক
১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
ইমরুলের আক্ষেপ ও সুখস্মৃতি নিয়ে বিদায়

টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ইমরুল কায়েস। আগেই ফেসবুকে জানিয়েছিলেন, জাতীয় লিগের (এনসিএল) পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচ খেলে লাল বলের ক্রিকেটকে ‘গুডবাই’ জানিয়ে দেবেন তিনি। যদিও বিদায়ী ম্যাচে হাসেনি তার ব্যাট। গতকাল তৃতীয় দিনে ঢাকা বিভাগের কাছে ৯ উইকেটে হারের ম্যাচে ১৬ ও ১ রানের ইনিংস খেলেছেন খুলনা বিভাগের এই ব্যাটসম্যান। বিদায়ী ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে ইমরুল বলেন, ‘প্রথমত বিসিবিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি যখন বিসিবিকে (অবসরের) সিদ্ধান্তের কথা জানাই, তারা ব্যাপারটিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। আমাকে অনেকেই বলেছে, ‘ভাই, আপনি আরও ২ বছর খেলতে পারতেন’।

কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে, আরও ২ বছর খেললে তারাই প্রশ্ন করত, ভাই, আপনি কবে খেলা ছাড়বেন- এই কথাগুলো শোনার চেয়ে নিজ থেকেই চলে যাওয়াটা ভালো মনে হয়েছে। সম্মান থাকা অবস্থাতেই সরে দাঁড়ানোর বোধশক্তি থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

২০০৮ সালে ব্লুমফন্টেইনে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে ইমরুলের। জাতীয় দলের জার্সিতে ৩৯ টেস্টে (৭৬ ইনিংস) ২৪.২৮ গড়ে ১ হাজার ৭৯৭ রান করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ ১৫০। শতক তিনটি। ২০১৯ সালে সবশেষ টেস্ট খেলেছেন এই বাঁ-হাতি। তবে রান পাননি। ইনদোরে ৬, ৬ ও ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ইডেন গার্ডেনসে ৪ ও ৫ রানের ইনিংস খেলেছেন ইমরুল। এরপর আর টেস্ট দলে জায়গা হয়নি তার। প্রসঙ্গত, জাতীয় দলের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ছাড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও দেননি ইমরুল। ওয়ানডেতে ৭৮ ম্যাচে ৩২.০২ গড়ে ২ হাজার ৪৩৪ রান করেছেন তিনি। আর ১৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৯.১৫ গড়ে ১১৯ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুরে। আর ২০১৭ সালের অক্টোবরে পচেফস্ট্রুমে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ আর্ন্তজাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। লংর্গার ভার্সনের ক্রিকেট আগে ছাড়ার কারণ জানাতে গিয়ে ইমরুল বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে খেলার মতো যে ফিটনেস লাগে। আমি যদি কাজ করতে থাকি, তাহলে হয়তো খেলতে পারব কয়েকটা বছর। কিন্তু চার দিনের ম্যাচ খেলতে যে স্ট্রেংথ, যে মানসিকতা লাগে... আমার মনে হয়েছে, এখন তরুণদের সঙ্গে না পারি, তাহলে নিজের কাছেই খারাপ লাগবে। একটা ছেলে যেভাবে বলের পেছনে দৌড়ায়, আমি তো তার সঙ্গে পারছি না। তাই মনে হয়েছে, আমি সঠিক পথে নাই। টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে এক দিনে শেষ হয়ে যাবে। আপনি পুরো শক্তি দিতে পারবেন। যেটা চার দিনের ম্যাচে কঠিন। ওদিক থেকে চিন্তা করেই লংগার ভার্সনকে না বলে দেওয়া।’

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ইমরুলের অভিষেক হয়েছে ২০০৭ সালে, খুলনায় খুলনা বিভাগের হয়ে। ১৩৮ ম্যাচের (২৪৮ ইনিংস) ক্যারিয়ারে রান করেছেন ৭ হাজার ৯৪৭। সর্বোচ্চ ২০৪। শতক ২০টি। ফিফটি ২৭টি। আর জাতীয় দলের টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ৩৯টি। দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ার নিয়ে ইমরুল বলেন, ‘২০০৬ (২০০৭ হবে) সালে যখন আমার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়, আমি চিন্তা করিনি যে বাংলাদেশ দলের হয়ে এতগুলো টেস্ট খেলতে পারব। আর সব শেষে এখন যেভাবে বিদায় নিলাম, আমি খুব খুশি যে বাংলাদেশের হয়ে ৩৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পেরেছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ প্রায় ১০-১২ বছর দলের সঙ্গে থেকেছি, খেলেছি বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন দেশে। এটা আমার জন্য অনেক গর্বের ছিল। আমি চেষ্টা করেছি ব্যাটিং করে হোক বা কিপিং করে হোক, দলের প্রয়োজনে অবদান রাখতে।’ তবে শেষটায় কোনো আক্ষেপ নেই ইমরুলের। তিনি বলেন, ‘আমার হয়তো আরও ভালো টেস্ট ক্যারিয়ার হতে পারত। তবে যেটা হয়নি সেটা নিয়ে এখন আর আফসোস মনে করি না। যা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।’

বিদায়ী ম্যাচের সংবাদ সম্মেলনের দিনে তিন সংস্করণ মিলিয়ে অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে ২০১১ বিশ^কাপের কথা জানিয়েছেন ইমরুল। তিনি বলেন, ‘২০১১ বিশ্বকাপের কথা আমার মনে আছে, আমরা যখন ইংল্যান্ডকে হারালাম। ম্যাচ শেষে আমরা যখন হোটেলে ফিরছিলাম, ওই রাতটার কথা আমার এখনও মনে পড়ে। আমাদের খেলা শেষ হয়েছিল রাত ১০টায়, হোটেলে ফিরতে আমাদের বেজেছিল রাত ১টা। মানুষজন যেভাবে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল, আমাদের তারা যেতে দেবে না, আমাদের সঙ্গে তারা আনন্দ করবে। আপনারা জানেন, আর্মি এসে মানুষগুলোকে সরিয়ে আমাদের যেতে দিয়েছিল। হোটেলের সামনেও অনেক মানুষ ছিল। ওই রাতটা মাঝেমাঝে আমাকে নাড়া দেয়। বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেট ও আমাদেরকে কতটা ভালোবাসে।’

লাল বলের ক্রিকেট ছাড়া ইমরুল সীমিত ওভারের ক্রিকেট নিয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি বিপিএল ও ডিপিএল (ঢাকা লিগ) খেলব। এনসিএলেও টি-টোয়েন্টি খেলব। অবশ্যই আমি চেষ্টা করব... ওয়ানডে যেহেতু এখনও আছে, আমি অবসর নিইনি। সামনে প্রিমিয়ার ডিভিশন খেলা আছে। আমি চেষ্টা করব ক্রিকেট উপভোগ করতে। বিপিএলেও চেষ্টা করব ভালো পারফর্ম করতে। যেখানেই খেলি না কেন, একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে যদি রান না করেন, তাহলে আত্মতৃপ্তিটা আসে না। চেষ্টা করব ওই তৃপ্তিটা নিয়ে ভালো ক্রিকেট খেলতে।’

ইমরুলের ক্যারিয়ারটা আরও লম্বা হতে পারত। তবে অন্যান্য ক্রিকেটাররা যেভাবে সুযোগ পেয়েছেন, এই বাঁ-হাতিকে সেভাবে বিবেচনা করেননি নির্বাচকরা! এ নিয়ে তার আক্ষেপও রয়েছে। যদিও এদিন এ বিষয়ে কূটনৈতিক কৌশলে উত্তর দিয়েছেন তিনি। ইমরুল বলেন, ‘এই মুহূর্তে এসে এই বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না। যেটা হয়েছে, আমি মনে করি, সেটা আমার কপালে ছিল। আমি বলব না, আমি শতভাগ ঠিক ছিলাম। আমি হয়তো আরও ভালো খেলতে পারতাম। ভালো খেললে হয়তো ধারাবাহিক সুযোগ পেতাম। তবে হ্যাঁ সুযোগগুলো যদি আরেকটু শিথিল থাকত, তাহলে হয়তো আমার ক্যারিয়ারটা ভিন্ন হতো। আমিও জানতাম না, খেলার পর আমি পরের ম্যাচে বা পরের সিরিজে থাকব কিনা। এ জন্য একটু কঠিন হয়ে গিয়েছিল। আর হতাশা নেই। আমি চেয়েছিলাম বাংলাদেশ দলকে আরও সার্ভিস দিতে। আমার পিক টাইমে আমি ভালো খেলছিলাম, চেয়েছিলাম দেশকে আরও কিছু দিতে। যেটা বললাম, হয়তো কপালে ছিল না। ভাগ্যে আমি বিশ্বাস করি।’ জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘদিন খেললেও বৈশি^ক কোনো টুর্নামেন্টের ট্রফি জিততে না পারার আক্ষেপ আছে ইমরুলের। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে আমি, সাকিব, মাশরাফি, মুশফিক, তামিম, রিয়াদ ভাই অনেক দিন একসঙ্গে খেলেছি। যদি বড় আসর থেকে একটা ট্রফি নিয়ে আসতে পারতাম, তাহলে ভালো লাগত। বাংলাদেশের হয়ে দ্বিপাক্ষিক ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো ট্রফি আনতে পারিনি। আয়ারল্যান্ডে একটা পেয়েছি। তবে এশিয়া কাপ বা নিদাহাস ট্রফির মতো বড় কিছু যদি আনতে পারতাম, তাহলে ক্যারিয়ার শেষে ভালো লাগত।’

আরও পড়ুন:

বিপাকে আলভেস

ইমরুল তার ক্যারিয়ারে অনেকের সঙ্গেই ওপেনিং করেছেন। তবে তার ক্যারিয়ারে সেরা উদ্বোধনী সঙ্গী তামিম ইকবাল বলেই জানিয়েছেন তিনি। ইমরুল বলেন, ‘তামিম ইকবাল অবশ্যই। আমি আর তামিম সবচেয়ে সফল ছিলাম। আমি ওর সঙ্গে ব্যাটিং উপভোগ করতাম। আমার শক্তি-দুর্বলতা ওকে জানাতে কখনও কুণ্ঠাবোধ করিনি। যখন ব্যাটিং করেছি, আমি ওকে বলেছি যে এই সময়টা আমি এখন ভুগছি, এই সময়টা কঠিন মনে হচ্ছে। তামিমও এই জিনিসটা বুঝেছে। এই জিনিসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন সঙ্গীর সঙ্গে যদি বোঝাপড়া ভালো না থাকে, তাহলে কঠিন হয়। সবাই নিজের মতো খেলতে থাকলে সম্ভব না। বোঝাপড়া থাকলে জুটিটা ভালো হয়।’ পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ সালে খুলনা টেস্ট ড্র করেছিল বাংলাদেশ। এটা সম্ভব হয়েছিল তামিম আর ইমরুলের ব্যাটিং বীরত্বে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে তারা ৭৫.৪ ওভারে স্কোরকার্ডে ৩১২ রান যোগ করেছিলেন। তামিম ২০৬ ও ইমরুল ১৫০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। খুলনা টেস্টে তামিমের সঙ্গে তার জুটির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে, ২০১৫ বিশ্বকাপ যখন খেলে আসি, আমি ভালো খেলিনি। আসার পর আমাকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল যে আমি কেন দলে থাকব। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে খেলার দিন (খুলনা টেস্ট) আমাকে কিছু কথা বলেছিল। যেটা আমি কিছুটা চাপে ছিলাম খেলাটা নিয়ে। আমি প্রথম ইনিংসে ফিফটি (৫১) করেছিলাম। এরপর প্রায় ১৫০ ওভার কিপিংও করেছিলাম। খুব ক্লান্ত ছিলাম ওই গরমের ভেতরে। এরপর আমি আর তামিম যখন শুরু করি (দ্বিতীয় ইনিংস), আমরা প্রায় হারের কাছে ছিলাম। আমাদের যখন শতরানের জুটি হয়ে যায়, তামিম আমাকে বলছিল, ‘দোস্ত আমি আর তুই পারি টেস্ট ম্যাচটা ড্র করতে। জানি কষ্ট হবে। আরেকটু কষ্ট করলে হয়তো ম্যাচটা ড্রয়ের কাছে নিয়ে যেতে পারব।’ এভাবে খেলতে খেলতে যখন ২০০ হয়ে গেল, ২৫০ হয়ে গেল, তখন বিশ্বাস চলে আসে যে এই ম্যাচটা আমরা ড্র করব। এভাবে আসলে জুটিটা গড়ে উঠেছিল।’ জাতীয় দলে তরুণদের মধ্যে অমিত হাসানের মধ্যে ভালো সম্ভাবনা দেখছেন ইমরুল। তিনি বলেন, ‘তরুণদের মধ্যে আমি এখন পর্যন্ত যে কয়জনের ব্যাটিং দেখলাম, আমার কাছে ভালো লেগেছে অমিত হাসানকে। জাতীয় লিগে সিলেটের হয়ে খেলছে। খুব ভালো ব্যাটসম্যান। টেকনিকের দিক থেকে, টেম্পারমেন্ট টেস্ট ক্রিকেটের জন্য পারফেক্ট আমি মনে করি। হয়তো নির্বাচকরা তাকে চিন্তা করবে। সে যদি পারফর্ম করতে থাকে, দলে আসবে অবশ্যই।’ বাংলাদেশ দলে তার সময়ের সেরা অধিনায়ক ও কোচের নাম জানাতে গিয়ে ইমরুল বলেন, ‘সেরা ক্যাপ্টেন... সবার সঙ্গেই খেলেছি, মুশফিক থেকে শুরু করে আশরাফুল ভাই, লাস্ট খেললাম মাশরাফি ভাইয়ের সময় পর্যন্ত। সবমিলিয়ে আপনি যদি আমাকে বলেন ভালো অধিনায়কত্ব বাংলাদেশের হয়ে কে করেছে, আমি বলব সাকিব আল হাসান। কারণ ওর সময়ে খেলে আমি আমার ভূমিকাটা বুঝতে পেরেছিলাম। আমার সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করত, কী আমার ভূমিকা, কীভাবে খেলতে হবে। হাথুরুসিংহে, আমি আবারও বলছি... অবশ্যই তিনি অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ কোচ। কিন্তু টেকিনক্যাল কোচ হিসেবে তিনি অনেক ভালো কোচ ছিলেন। হয়তো তার অ্যাটিচিউডে অনেক সমস্যা ছিল, অনেকের সঙ্গে বনিবনা হতো না। কিন্তু ব্যাটার হিসেবে আমি উনার কাছ থেকে অনেক শিখেছি। ওদিক থেকে বলব, এ দুজনকে আমার ভালো লেগেছে।’ ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দলে কোচ হিসেবে কাজ করতে চান জানিয়ে ইমরুল বলেন, ‘আমি বেশিরভাগ সময়ই অস্ট্রেলিয়ায় থাকি। সেখানে আমার পরিবার থাকে। ওখানেও অস্ট্রেলিয়ার একটা দলের হয়ে প্রিমিয়ার ডিভিশন খেলছি আমি। ওখানে একটা কোচিং একাডেমি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। আমি চাই ক্রিকেট ছাড়ার পর ক্রিকেটের সঙ্গেই থাকতে এবং ক্রিকেটের আরও উন্নত জ্ঞান পেতে। আমি চেষ্টা করব, সেখানে বড় বড় পর্যায়ে কাজ করতে। সেখানে কোচদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা নেওয়ার আছে। ভবিষ্যতে যদি কখনও বাংলাদেশ দলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়, আমি নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করব।’