ট্রাম্প-২ : বিশ্বকে কী বার্তা দিচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
ট্রাম্প-২ : বিশ্বকে কী বার্তা দিচ্ছে

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রশাসন সাজিয়ে তুলছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ডজনখানেক কর্মকর্তার নাম ঠিক করা হয়েছে, যাদের আমরা মার্কিন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে পাব এবং তারাই নানা বৈশি^ক ইস্যুতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে বাকি বিশ^ কেমন বার্তা পাচ্ছে, তা নিয়ে বিবিসি একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এদিকে গতকাল ট্রাম্প প্রশাসনে নতুন করে জায়গা করে নিলেন ইলন মাস্ক ও বিবেক রামাস্বামী। তারা দুজনই ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’ বিভাগ সামলাবেন। এ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, এক সঙ্গে এই দুই চমৎকার আমেরিকান আমার প্রশাসনের জন্য সরকারি আমলাতন্ত্রকে খোলস থেকে বের করে আনবেন। এ ছাড়া মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন রক্ষণশীল সংবাদ মাধ্যম ফক্স নিউজের উপস্থাপক পিট হেগসেথ। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, হোমল্যান্ড সিকিউরিটিসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম।

বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যাদের নির্বাচন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কিছু ‘কমন বিষয়’ দেখা গেছে।

অভিবাসীদের জন্য অশনী সংকেত : ট্রাম্প প্রশাসনে যাদের নাম এসেছে, তাদের দেখে একটি বিষয় অনুমান করা যেতে পারেÑ ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারে অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার যে হুমকি দিয়েছেন, সেটি অমূলক নয়। স্টিফেন মিলার, যিনি ২০১৫ সাল থেকে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা এবং তার ট্রাম্পের বক্তৃতা লেখকও ছিলেন। তাকে হোয়াইট হাউসের ডেপুটিপ চিফ অব স্টাফ হিসেবে ট্রাম্প বাছাই করেছেন। সম্ভবত তিনি অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার পরিকল্পনার ছক তৈরি করবেন। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মিলার অভিবাসী ইস্যুতে কঠোর নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

চীনবিরোধী শক্তি প্রকট হবে : অনেক রক্ষণশীল মনে করেন, বিশ^ব্যাপী রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে মার্কিন প্রভাবের সামনে একমাত্র চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন। সমালোচকরা বলেছেন, প্রথম মেয়াদে চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প শুধুমাত্র বাণিজ্য যুদ্ধ জারি রেখেছেন। কিন্তু এবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাজিয়েছে কট্টর চীনবিরোধী দুই কর্মকর্তাকে দিয়ে।

কংগ্রেসের ওপর রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া : ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ের পাশাপাশি রিপাবিলকানরা সিনেটেও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এ ছাড়া প্রতিনিধি পরিষদও প্রায় তাদের দখলেই রয়েছে। কিন্তু তারপরও ট্রাম্প তার নিজের কাছে ক্ষমতা তুলনামূলক বেশি রাখতে চাইছেন, যেন কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে তেমন বাধার মুখে না পড়তে হয়। গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টও দিয়েছেন।

অনুগতদের পুরস্কৃত করা : এখন পর্যন্ত প্রশাসনে যাদের নাম দেখা গেছে, তারা সবাই ট্রাম্পের অনুগত হিসেবে পরিচিত। ২০১৬ সালে ট্রাম্প রিপাবলিকানদের ওপর নির্ভর করেছিলেন, এবার তিনি সে নীতি থেকে সরে এসেছেন। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প দক্ষিণ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েমকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি এবং ফক্স নিউজের হোস্ট এবং রক্ষণশীল লেখক পিট হেগসেথকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন। তারা দুজনই শুরু থেকেই ট্রাম্পের উগ্র রক্ষক।