ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় কেন চাপে জাতিসংঘ?
আগামী ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তার প্রচারের সময় বলেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনে শান্তি আনবেন। তবে কীভাবে এই লক্ষ্য পূরণ করবেন, সে বিষয়ে তেমন কিছুই বলেননি তিনি। তবে ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় নতুন করে বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন অনেকে। তবে ট্রাম্পের জয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে জাতিসংঘ। বিভিন্ন প্রকল্পে তহবিল সংকটে থাকা জাতিসংঘ নতুন করে চাপে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রথমবার ক্ষমতায় এসে বিশ্বের বেশ কয়েকটি সংস্থা এবং চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প৷ জাতিসংঘে বাৎসরিক চাঁদা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বোঝা- বলেছিলেন এমন কথাও৷ এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয়বারের মতো ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার বিষয়টি জাতিসংঘসহ বিশ্ব রাজনীতিতে কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে চলছে আলোচনা৷ এদিকে বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং কার্যক্রম থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে গেলে তা চীনের জন্য নিজেকে বিশ্বমঞ্চে উপস্থিত করার সুযোগ হয়ে উঠতে পারে৷
জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ডাইরেক্টর রিচার্ড গোয়ান বলেন, জাতিসংঘ দপ্তর জানতো যে, ট্রাম্প আবার ফিরে আসতে পারে৷ আর তাই যুক্তারাষ্ট্রের সম্ভাব্য বাজেট কমানোর পরিস্থিতি সামলাতে এক ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল৷ তিনি বলেন, ‘আর তাই, আন্তনিও গুতেরেস (জাতিসংঘের মহাসচিব) ও তার দল অপ্রস্তুত নয়৷ তবে তারা জানেন যে, আগামী দিনগুলো খুব কঠিন হতে পারে৷’
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন৷ সবচেয়ে বেশি আর্থিক অবদান যুক্তরাষ্ট্রের৷ জাতিসংঘের মূল বাজেটে দেশটির অবদান ২২ ভাগ আর শান্তিরক্ষী মিশনের খরচের ২৭ ভাগ প্রদান করে দেশটি৷ তাই বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা, তো আছেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতি খাতের এবং সহায়তা খাতের বাজেট এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে সর্বশেষ ক্ষমতায় এসেছিলেন ট্রাম্প৷ এর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের বাজেট ব্যপকমাত্রায় কমিয়ে আনা৷ যদিও এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ট্রাম্পকে চাপে রেখেছিল কংগ্রেস৷ তবে এবার ক্ষমতা গ্রহণের পর জাতিসংঘ বিষয়ে তাদের নীতি কী হবে তা নিয়ে ট্রাম্পের দলের কেউ কোনো মন্তব্য করেনি৷
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের খরচের একটি অন্যায্য ব্যয় বহন করছে৷’ এ সময় তিনি এর সংস্কারেরও দাবি জানিয়েছিলেন৷ ট্রাম্প ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘে বকেয়ার পরিমাণ ছিল- মূল বাজেটে ৬০ কোটি এবং শান্তিরক্ষী মিশনে ২০০ কোটি ডলার৷ জো বাইডেন প্রশাসনও দেনার দায়ে আটকে আছে৷ এখন পর্যন্ত বাইডেনের প্রশাসনের দেনা, মূল বাজেটে ৯৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং শান্তিরক্ষী মিশনে ৮৬ কোটি ২০ লাখ ডলার৷
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেসর মুখপাত্র স্টেফান দুজরিক বলেন, ‘‘কোনো নীতি নেওয়া হতে পারে বা না-ও হতে পারে এমন কোনো বিষয়ে আমরা কথা বলতে চাই না৷ তবে সদস্যরাষ্ট্রেগুলোর সাথে ওভাবেই কাজ করি, যা আমরা সবসময় করে আসছি৷’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস