বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন /

শরীরে গুলি নিয়ে চাকরির আশায় ঘুরছেন আহসান

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:১৫
শেয়ার :
শরীরে গুলি নিয়ে চাকরির আশায় ঘুরছেন আহসান

রাজবাড়ীর পাংশা পৌর শহরের কুড়াপাড়া গ্রামের এম আলী আহসান। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এর মধ্যেই কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনে যোগ দেন এম আলী আহসান। আন্দোলনে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হন। শরীরে বিভিন্ন স্থান থেকে ৫ গুলি বের করা হলেও বর্তমানে আরও ৯টি স্থানে রয়ে গেছে গুলি। চিকিৎসার জন্য ছুটছেন বিভিন্ন প্রান্তে। পারিবারিকভাবে কিছুটা অসচ্ছল হওয়ায় চিকিৎসা সেবা নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।

সেদিনের ভয়াবহতার তুলে ধরে এম আলী আহসান বলেন, ‘গত ১৮ জুলাই দুপুর ১০টা। ঢাকার উত্তরার রাজলক্ষী ওভার ব্রিজের সামনে আন্দোলনে ছিলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। হঠাৎ করেই মুহুর্মুহু গুলি। গুলিবিদ্ধ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। কিছু সময় পর জ্ঞান ফিরে এলে দেখতে পাই আমাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করি। কিন্তু অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য কুয়েত বাংলাদেশ সরকারি হাসপাতালে আসি। সেখানে লাশ আর আহত মানুষের খুব চাপ থাকায় সিরিয়াল দিয়ে লাশের সঙ্গে শুয়ে থাকতে হয়। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার সময় চিকিৎসা দেওয়া হয়। তারপর সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাসায় অবস্থান করতে থাকি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এরপর গত ২৪ জুলাই শরীরের অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় ইন্টার্নি চিকিৎসক ভাতিজা আব্দুল আলিমের পরামর্শে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোঃ আরিফুর রহমানের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে ওইদিনই আবার ঢাকায় ফিরে আসি। সর্বশেষ স্বাধীন বাংলাদেশের পর আবারও গত ৯ আগস্ট মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজে ভর্তি হই। সেখানে গত ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ভর্তি থেকে চিকিৎসা হই। তারা সিটি স্ক্যান, এক্স-রে, আরো অনেক পরীক্ষা করে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় খুব গতিতে গুলি লাগায় গুলি হারের জয়েন্টের মধ্যে আটকে থাকায় তারা বের না করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু বেকার থাকায় আর্থিক অসুবিধার কারণে এখনো ৯টি গুলি শরীরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করাব।’

আহসানের সাংবাদিক বন্ধু মাসুদ রেজা শিশির বলেন, ‘শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির জন্য ঢাকায় অবস্থান করে আসছিল আহসান। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের শুরু থেকেই রাজপথে ছিল সে। শিক্ষাজীবন থেকেই সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত প্রতিবাদী ছিল আহসান। এখন তার সুচিকিৎসার খুব বেশি প্রয়োজন। তার সুচিকিৎসায় এগিয়ে আসার দাবি জানাই।’