সিনেমায় মার্কিন নির্বাচন
আমেরিকার নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ থাকে সারাবিশ্বের। গতকাল আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে দেশের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট নিয়ে বিভিন্ন সময় নির্মাণ করা হয়েছে সিনেমা। সেসব সিনেমা নিয়েই এ আয়োজন। লিখেছেন- ফয়সাল আহমেদ
দ্য বেস্ট ম্যান
ফ্রাঙ্কলিন জি সাফনারের এ সিনেমায় অভিনয় করেন হেনরি ফন্ডা, কিফ রবার্টসন ও লি ট্রেসি। এটি নির্মিত হয় ১৯৬০ সালের একই নামের নাটক অবলম্বনে। মার্কিন নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া ও পেছনের গল্প উঠে আসে সিনেমায়। মুক্তি পায় ১৯৬৪ সালে।
অল দ্য প্রেসিডেন্টস মেন
ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি কীভাবে কীভাবে রিচার্ড নিক্সনকে ক্ষমতাচ্যুত করে, সেটাই এ সিনেমায় তুলে আনেন অ্যানা জে পাকুলা। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটি নির্মিত হয় দুই অনুসন্ধানী সাংবাদিক কার্ল বার্নস্টেইন ও বব উডওয়ার্ডের লেখা বই অবলম্বনে। পর্দায় দুই সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করেন ডাস্টিন হফম্যান ও রবার্ট রেডফোর্ড। সমালোচকরা মনে করেনÑ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেন জরুরি, সেটা এ সিনেমায় ভালোভাবে উঠে এসেছে।
স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন
ফ্রাঙ্ক কাপরারের এ সিনেমা মুক্তি পায় ১৯৪৮ সালে। এক ধনকুবের রিপাবলিকান প্রার্থী হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার স্বপ্ন দেখার গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটি সমালোচকদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেন স্পেনসার ট্রেসি ও ক্যাথেরিন হেপবার্ন।
দ্য ওয়ার রুম
ডি এ পেনেবেকার ও ক্রিস হেগেডাসের যুগান্তকারী ডকুমেন্টারিটি ১৯৯২ সালে প্রেসিডেন্ট পদে বিল কিনটনের প্রথমবার দৌড়ের পর্দার পেছনের ঘটনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এটি যেন ‘প্রাইমারি কালারস’ সিনেমার বাস্তব সংস্করণ হয়ে দাঁড়ায়। এতে কিনটনকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দেখানো হয়। কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলো হলো কিনটনের কৌশল প্রণয়নকারী জেমস কারভিল ও যোগাযোগ পরিচালক জর্জ স্টেফানোপোলোস।
দ্য আমেরিকান প্রেসিডেন্ট
মাইকেল ডগলাস এ সিনেমায় অভিনয় করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট চরিত্রে। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটি পরিচালনা করেন রব রেইনার। বিপুল ব্যবসায়িক সাফল্যের সঙ্গে সমালোচকদের প্রশংসা পায় এটি। মাইকেল ডগলাস ছাড়াও এতে আছেন অ্যানেট বেনিং, মার্টিন শিন। জনপ্রিয় এক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবার নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিপত্নীক প্রেসিডেন্ট প্রেমে পড়েন এক পরিবেশবাদীর। এরপর কী হয়, তা নিয়েই গল্প।
ওয়াগ দ্য ডগ
নাম শুনেই আন্দাজ করা হয় এটি কমেডি ঘরানার সিনেমা। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া এ ব্ল্যাক কমেডি আদতে রাজনৈতিক বিদ্রুপাত্মক সিনেমা। প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেন ডাস্টিন হফম্যান ও রবার্ট ডি নিরো। সমালোচকদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়, ২০২০ সালে সর্বকালের সেরা রাজনৈতিক সিনেমার তালিকা করে ওয়াশিংটন পোস্ট। সেখানে এই ছবি ছিল ১২ নম্বরে। নির্বাচনের ঠিক আগে এক যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেওয়া নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।
প্রাইমারি কালারস
১৯৯২ সালে বিল কিনটনের নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে নির্মিত সিনেমা। মাইক নিকোলাসের এ কমেডি-ড্রামা ছবিটি তৈরি হয়েছে জো কেইনের লেখা ‘প্রাইমারি কালারস : আ নভেল অব পলিটিকস’ উপন্যাস অবলম্বনে। অস্কারে দুই মনোনয়ন পাওয়া এ ছবিতে অভিনয় করেন জন ট্রাভেলটা, এমা থম্পসন, ক্যাথি বেটস প্রমুখ। সমালোচকদের কাছে সমাদৃত হয় সিনেমাটি। মার্কিন রাজনীতিতে কী হয়, সেটা এতে ভালোভাবে উঠে এসেছে। এমনটাই ছিল বেশিরভাগ সমালোচকের মতে। মুক্তি পায় ১৯৯৮ সালে।
জার্নিস উইথ জর্জ
অ্যালেক্সান্দ্রা পেলোসি ও অ্যারন লুবারস্কির এ আলোচিত তথ্যচিত্রটি মুক্তি পায় ২০০৩ সালে। এটি নির্মিত হয়েছে ২০০০ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের দীর্ঘ নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে।
গেম চেঞ্জ
২০১২ সালের আমেরিকান রাজনৈতিক ড্রামা ঘরানার টেলিভিশন চলচ্চিত্র এটি। সিনেমায় ২০০৮ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জন ম্যাককেইনের প্রচারাভিযানের ঘটনাগুলো চিত্রিত হয়। পরিচালনা করেন জে রোচ এবং চিত্রনাট্য লেখেন ড্যানি স্ট্রং। সাংবাদিক মার্ক হ্যালপেরিন ও জন হেইলেম্যানের নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে ২০১০ সালে প্রকাশিত গেম চেঞ্জ শীর্ষক বইয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয় সিনেমাটি। জন ম্যাককেইনের ভূমিকায় অভিনয় করেন এড হ্যারিস, সারাহ পলিনের ভূমিকায় জুলিয়ান মুর এবং স্টিভ শ্মিটের ভূমিকায় উডি হ্যারেলসন।
দ্য আইডিয়াজ অব মার্চ
জর্জ কুনি বরাবরই রাজনৈতিক নানা বিষয় নিয়ে সোচ্চার। এবার নির্বাচনে তিনি সরাসরিই কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেন। ২০১১ সালে এই পলিটিক্যাল ড্রামা ছবিটি বানান। এতে কুনি নিজেও অভিনয় করেন। আরও ছিলেন রায়ান গসলিং, পল জিয়ামাটি, ইভান র্যাচেল উড। বক্স অফিসে সাফল্যের সঙ্গে অস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে মনোনীত হয় সিনেমাটি। প্রদর্শিত হয় প্রথম সারির চলচ্চিত্র উৎসবগুলোয়।