আইন পেশাজীবীদের জন্য বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে জাইকার প্রশিক্ষণ
আইন পেশাজীবীদের জন্য বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সহযোগিতায় অ্যাক্সেস টু জাস্টিস প্রকল্পের আওতায় আইন পেশাজীবীদের জন্য বিরোধ নিষ্পত্তি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাইকা ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এবং বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (জেএটিআই) এই প্রশিক্ষণটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের বিচার প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে এ বছরের এপ্রিলে এটুজে প্রকল্প শুরু করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এবং জাইকা। এই লক্ষ্যে আইন পেশাজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এটুজে প্রকল্পের আওতায় বিচারক, লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের জন্য বিরোধ নিষ্পত্তি প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এ সকল আইন পেশাজীবীরা বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। একইসঙ্গে, তারা দেশের বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিতেও ভূমিকা রাখেন।
প্রশিক্ষণের সময় জাপানের সাবেক জাজ ও মেডিয়েটর প্রফেসর ইনাবা কাজুতো জাপান ও অন্যান্য এশীয় দেশের মামলাগুলোর ক্ষেত্রে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রাতিষ্ঠানিক কৌশলের ওপর বক্তব্য দেন। এ সময় একটি অনুশীলনমূলক-বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেন তিনি। প্রকল্পের পাইলট জেলা হিসেবে নরসিংদী ও কুমিল্লার বিচারক, লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা ও আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট বিচারিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ৪০ জন এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন।
সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করার পর অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন প্রফেসর ইনাবা কাজুতো। সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের ও জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এ সময় আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের আটকে যাওয়া বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) গুরুত্ব সবার সামনে তুলে ধরেন। স্থবির হয়ে যাওয়া সকল বিরোধ নিষ্পত্তি করতে দেশে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি, তিনি বিভিন্ন বিরোধ মামলার সমাধান করার ক্ষেত্রে লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।
এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণকারী পেশাজীবীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে; যা কার্যকর ও গতিশীল উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে।’
আয়োজনের বিষয়ে বলতে গিয়ে জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে প্রশিক্ষণের সহ-আয়োজক - আইন ও বিচার বিভাগ এবং বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তিনি বলেন, ‘এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতা অন্য পেশাজীবীদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া এবং দেশে দক্ষ ও কার্যকরভাবে বিরোধ নিষ্পত্তি চালু করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাইকা বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে সর্বোচ্চ সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; এবং এই প্রশিক্ষণ বর্তমান বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে ব্যাপক অবদান রাখবে।’