ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত নিজামের বাড়িতে আহাজারি
লেবাননের বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধা নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি। নিজামের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামে। তার মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন পরিবার ও এলাকাবাসী।
গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা ২৩ মিনিটে লেবাননের বৈরুতের হাজমিয়ে এলাকায় কর্মস্থলে যাওয়ার পথে (একটি কফি শপে অবস্থানকালে) নিজাম উদ্দিন ইসরায়েলি বিমান হামলায় মারা যান। তার মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছালে এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজন তার বাড়িতে ভিড় জমান।
আজ রবিবার সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খাড়েরা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুস ও মৃত আনোয়ারা বেগম দম্পতির ২ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন (৩২)। বাবার মৃত্যুর পর অভাব অনটনের সংসারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে ৭ লাখ টাকা দেনা করে গত ১২ বছর আগে লেবাননে পাড়ি জমান নিজাম। সেখানে যাওয়ার পর ভালো কাজ না পাওয়ায় তিনি আশানুরূপ উপার্জন করতে পারেননি। তবে ১২ বছরের প্রবাস জীবনে পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে না পারলেও মায়ের থাকার জন্য একটি টিনের ঘর বানিয়েছিলেন। ঘর বানানোর ৬ মাস পরেই মারা যান মা আনোয়ারা বেগম।
নিজামের বড় বোন সায়েরা বেগম জানান, বিদেশে গিয়ে তার ভাই ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারেননি। দেশে আসার কথা বললে আসা-যাওয়ার খরচের কথা চিন্তা করে গত ১২ বছরে একবারও দেশে আসেননি। এবার দেশে আসার চিন্তা ভাবনা ছিল, একথা বলেই তিনি হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন।
তিনি বলেন, ‘রাতে তার বন্ধুর মাধ্যমে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে আমাদের সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। এখন আমরা শেষ বারের মত তার মুখটি দেখতে চাই। ভাইয়ের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক সরকার।’
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানান, ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। বৈরুতের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই নিজামের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।