‘আমি দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি’
বিক্ষোভের মুখে গতকার শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় চলমান একটি নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে শিল্পকলা একাডেমি।
দেশ নাটক প্রযোজিত ‘নিত্যপুরাণ’ মঞ্চায়নের সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে বিক্ষোভ করেন ২০ থেকে ২৫ তরুণ। এই পরিস্থিতিতে নাটকটির মঞ্চায়ন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় একাডেমির কর্তৃপক্ষ। এরপর সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদ। এ বিষয়ে আজ রবিবার সকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসে নাটক বন্ধের প্রকৃত কারণ এবং ওই সময়ের পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
জামিল আহমেদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ২২ জায়গায় শিল্পকলা একাডেমিতে হামলা হয়েছে। সেসব আমার মাথায় ছিল। ঢাকার শিল্পকলা একাডেমরি ভেতরে দর্শক ছিল। উত্তেজিত কেউ গিয়ে যদি দর্শকদের আক্রমণ করে বসে সে শঙ্কা ছিল। দর্শকের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা প্রদর্শনী বন্ধ করি। আমি ভেতরে গিয়ে দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
ঘটনার বর্ণনার দিয়ে তিনি বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শিল্পকলার আয়োজনে যাত্রা উৎসব চলছে। আমি এবং নাট্যকলা বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির সেখানে ছিলাম। নাট্যশালার সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে শুনে আমি সেখানে যাই। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলি। তারা বলেন, এহসানুল আজিজ বাবু স্বৈরাচারের দোসর। তার নাট্যদলের প্রদর্শনী করতে দেবে না। আমি তাদের বুঝিয়েছি, দেশ নাটকের জনা বিশেক সদস্যও জুলাই গণঅভ্যুথানে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে এক গুলিবিদ্ধও হয়েছেন।’
সৈয়দ জামিল আরও বলেন, ‘প্রথমে তারা আমার কথা মেনে নেয়। আমরা নাটকের প্রদর্শনী শুরু করতে বলি। কিন্তু পরে আবার বিক্ষোভ শুরু করে তারা। তখন তারা বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তাদের একজন নিজেকে রিকশাচালক পরিচয় দিয়ে জানায় যে, জুলাই আন্দোলনে তিনিও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।’
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
এদিকে, গতকাল নাটক মঞ্চায়নের খবর পেয়ে ব্যানারসহ একাডেমির বাইরে অবস্থান নেয় একদল। এরপর তারা দেশ নাটকের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় আগত ব্যক্তিদের ভেতরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিক্ষোভকারীরা মূলত দেশ নাটকের সদস্য এহসান আজিজ বাবুর ফেসবুকে দেশবিরোধী নানা প্রচারণা ও বর্তমান সরকার প্রধানসহ অন্যান্য উপদেষ্টার ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ ও রাজাকার আখ্যা দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে নাটকের দল থেকে বহিষ্কার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়। এ ছাড়া শিল্পকলা একাডেমিকে এ ধরনের দলকে হল বরাদ্দ দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:
‘এভাবে বিয়ে করা নাকি অর্থহীন’