তরুণদের ইতিবাচক চিন্তাই পারে দেশকে এগিয়ে নিতে: আলোচনা সভায় বক্তারা

অনলাইন ডেস্ক
৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:৫৪
শেয়ার :
তরুণদের ইতিবাচক চিন্তাই পারে দেশকে এগিয়ে নিতে: আলোচনা সভায় বক্তারা

তরুণদের প্রবল ইতিবাচক চিন্তাকে কাজে লাগানোর মাধ্যমেই দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। এই চিন্তা-চেতনাকে দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল বুধবার বিকেলে বরিশালের হোটেল গ্র‍্যান্ড পার্কে ‘দেশ গঠনে তারুণ্যের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে ও ডেমোক্রেসি ইন্টার‌ন্যাশনালের আয়োজনে ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনের আওতায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনিরা আক্তার বলেন, চিকিৎসা খাত, জলবায়ূ-পরিবেশ, উদ্যোক্তা, লিঙ্গ বৈষম্য, গবেষণা, সবকিছুকে উন্নত করতে হলে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে যে অসঙ্গতি রয়েছে তা দূর করতে হলে সবাইকে নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন জাতিগত উন্নয়নের প্রতি নজর দেওয়া। 

সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. হুমায়ুন কবির বলেন, তরুণরা দেশের জন্য চিন্তা করছে। এই তরুণ সমাজ নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। তরুণদের নাগরিক ভাবনাগুলো বাস্তবায়নে ও আকাঙ্ক্ষাগুলো পূরণ করতে হলে শুধু রাষ্ট্রকে বা নাগরিকদের একপাক্ষিকভাবে এগিয়ে আসলে চলবে না, সমন্বিতভাবে সকলকে এগিয়ে এসে ভাবনাগুলো বাস্তবায়নের পথ সুগম করতে হবে।

দেশের উন্নয়নের জন্য তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন সবার আগে নজর দিতে হবে বলে মনে করেন সেন্টার ফর ক্লাইমেট রিসার্চ এন্ড কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা নাহিন রেজওয়ান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে স্কিল ডেভেলপমেন্ট খুব কম। এছাড়া, উন্নত দেশে মাধ্যমিক পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করা হয়। বাংলাদেশেও গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, তবেই তরুণরা নতুন ধারণা নিয়ে দেশেকে এগিয়ে নিবে।

লিঙ্গ সমতা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সহচরীর প্রতিষ্ঠাতা ফারজানা ফেরদৌস জাতিগত উন্নয়নের জন্য নারী-পুরুষ সম্প্রীতির উপর জোর দিয়ে বলেন, নারী আর পুরুষের আগে ভাবতে হবে আমরা মানুষ। একজন মানুষ হিসেবে পরস্পরকে সহায়তা, সম্প্রীতি দেখালেই বৈষম্য নিরোধ হবে, জাতিগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানান ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক দিপু হাফিজুর রহমান। এসময় তিনি বলেন, আজকের তরুণদের নাগরিক ভাবনাই আগামীর দেশ গঠনে সহায়তা করবে। সকলের স্বাতন্ত্র চিন্তার মাধ্যমেই জিতে যাবে আমাদের দেশ।

ইউএসএআইডির স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিল) প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে নাগরিক প্রত্যাশা তুলে ধরতে সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় আলোচনা, নাট্য প্রদর্শনী, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচী পরিচালিত করছে। এছাড়াও ক্যাম্পেইনটির আওতায় amiojittechai.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রহণ করা হচ্ছে নাগরিকদের দাবি ও মতামত।

অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা ছাড়াও ইন্টারেক্টিভ থিয়েটার, কুইজ ও ভিডিও মেসেজ প্রতিযোগিতা এবং ক্যাম্পেইনের রীল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অংশগ্রহনকারীরা সমকালীন বিভিন্ন ইস্যুর সমাধান বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন কেন্দ্রীয় পর্ষদের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শুভঙ্কর চক্রবর্তী। এছাড়াও বক্তব্য দেন বরিশাল ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা আওলাদ খান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল-সবুজ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা তাহসিন উদ্দিন, উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংগঠন মানবী’র প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য সাবিহা রহমান রূপন্তী।