পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করে স্কুলমাঠে নুরের জনসভা
এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন করে স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হলো ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক নুরের জনসভা। আজ বুধবার পটুয়াখালীর দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে উপজেলায় চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
আজ বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণঅধিকার পরিষদের উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মো. লিয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নুরুল হক নুর।
জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর বিদ্যালয়টির দশম শ্রেণির সাধারণ ও কারিগরি শাখার শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হয়। প্রতিদিন দুপুর দেড়টায় শুরু হয়ে পরীক্ষা চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। এ পরীক্ষা আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। তবে জনসভার জন্য ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজকের ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষাটি এগিয়ে নিয়ে সকাল ১০টায় শুরু করে দুপুর ১টায় শেষ করে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন সৈকত মুঠোফোনে আমাদের সময়কে বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের জনসভার কারণে পরীক্ষা সকাল ১০টায় নিয়ে আসা হয়েছে। ইউএনও স্যার অনুমতি দিয়েছেন। তাই আমিও পারমিশন দিয়েছি।’
গণঅধিকার পরিষদের দশমিনা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মো. লিয়ার হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষার সময়সূচী পরিবর্তন করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। জনসভার অনুমতি দিয়েছেন দশমিনার ইউএনও।’
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইরতিজা হাসান মুঠোফোনে আমাদের সময়কে বলেন, ‘পারমিশনের কপিগুলো কোথায় একটু দেখাইতে বলেন। কোন পারমিশনই তাদেরকে দেওয়া হয়নি। জনসভার পারমিশন তো ডিসি অফিস থেকে দেবে। জনসভার বিষয়ে পারমিশন আমার এখানে দেওয়ার নাই। আর স্কুল কম্পাউন্ডের ভেতরে যে তারা প্রোগ্রাম করছে সেই বিষয়ে তো আমার কাছ থেকে পারমিশন কেউই নেয়নি। না স্কুল কর্তৃপক্ষ, না ওনারা।’
তিনি আরও জানান, ‘ওনারা জনসভার পারমিশনের আবেদন ডিসি স্যারের কাছে দিয়েছে। ডিসি স্যার সেটা এসপি স্যারকে দিয়েছেন। এসপি সেটা থানার ওসিকে দিয়েছেন। থানার ওসি সেটা তদন্ত করে তাদের অফিসিয়াল রিপোর্ট করেছে। এটা হচ্ছে সেই মাধ্যম। এটা আমার কাছে তারা জাস্ট একটা অনুলিপি দিয়েছে। এখানে আমাদের লিখিতভাবে কোনো অনুমতি দেওয়ার সুযোগই নাই। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এখন পর্যন্ত কোনো বিষয়ই আমার সঙ্গে শেয়ার করেননি। উনি তার নিজের ডিসিশন মতো এই বিষয়গুলো করেছেন। এ বিষয়গুলো উল্লেখ করে আমি ব্যবস্থা নিব।’
এদিকে, জনসভায় নুরুল হক নুর বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি যারা আছেন সকলেই জনগণের জন্য কাজ করবেন। একটা কথা মনে রাখবেন এখন কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় নাই। কাজেই আওয়ামী লীগের মত থানায় গিয়ে পায়ের ওপর পা ঝুলিয়ে ওসির সঙ্গে গাল গপ্প করা, ইউএনওর সঙ্গে গাল গপ্প করা, তাদের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা এগুলো কোনো রাজনৈতিক দল এখন পারবে না। এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার। ওসি হোক, ডিসি হোক, ইউএনও হোক, এসপি হোক যারা জনগণের জন্য কাজ করবে না তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি গত পনেরো বছরে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারি ও প্রশাসনে কিভাবে দলীয়করণ করা হয়েছিল। আমি পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই আপনারা যদি কোনো রাজনৈতিক দলের গোলামি করেন তাহলে প্রজাতন্ত্রের চাকরি করতে পারবেন না।’
এ সময় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) সংসদীয় আসনে নির্বাচন করার ঘোষণাও দেন ডাকসুর সাবেক এই ভিপি।