২২ ঘণ্টা ঝর্ণার পাথরে আটকে থাকার পর তরুণী উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:০৩
শেয়ার :
২২ ঘণ্টা ঝর্ণার পাথরে আটকে থাকার পর তরুণী উদ্ধার

বন্ধুর সঙ্গে ঝর্না দেখতে গিয়ে হঠাৎ পা পিছলে দুই পাথরের ফাঁকে পড়ে যান এক তরুণী। সেখানেই বুক পর্যন্ত জলে টানা ২২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর উদ্ধার হলেন ১৯ বছরের এ তরুণী। গত রবিবার কর্নাটকের তুমাকুরুতে এ ঘটনাটি ঘটে।

দ্য টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তরুণীর নাম হামসা গৌড়া। রবিবার দুপুরে বান্ধবীর সঙ্গে তুমাকুরুর মাইডালা হ্রদ দেখতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। হঠাৎই পা পিছলে দুই পাথরের ফাঁকের ফাটলে পড়ে যান তিনি।

হাসপাতালে হামসা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আচমকা পা পিছলে তলিয়ে যাই। চোখ খুলে দেখি, চারপাশে শুধু অন্ধকার। শুধু জলের শব্দ ছাড়া কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না।’ 

এদিন বুক পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে পাথুরে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বাকি রাতটা ওই ভাবেই কাটিয়ে দেন তিনি।

এদিকে রবিবার দুপুর থেকেই হামসার খোঁজে শুরু হয়ে গিয়েছিল উদ্ধার অভিযান। দমকল এবং পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয়রাও উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করেছেন।

তুমাকুরুর জেলা দমকল আধিকারিক শশীধর কেপি জানান, মূলত প্রতিটি ফাটলের নীচে পানি থাকায় উদ্ধারকাজ ব্যহত হচ্ছিল। সে জন্য পাথর ও কংক্রিট বোঝাই বস্তা রেখে পানির প্রবাহ আংশিক বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পানি কমে আসলে ফাটলের নীচে নেমে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। শেষমেশ গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই তরুণীর খোঁজ মেলে। চার দমকলকর্মীর সহযোগিতায় তাকে ওপরে তুলে আনা হয়। ২২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পানিতে থাকার কারণে হামসার হাত-পায়ের চামড়া সাদা হয়ে গিয়েছিল। সারা শরীরেও ছিল ছোট-বড় নানা ক্ষতের দাগ। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এখন সুস্থ রয়েছেন তিনি। 

উদ্ধারের পর হামসা জানান, গোটা সময়টা চোখের পলক অবধি ফেলতে পারিনি। প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছিল এখনই বুঝি কেউ এসে আমাকে বাঁচাবে!

এদিকে শশীধর বলেন, ‘আমাদের কর্মীরাও তাদের জীবনের বাজি রেখে উদ্ধার কাজে নেমেছিলেন। তরুণীকে উদ্ধারের পর যখন তাকে জড়িয়ে কেঁদে উঠলেন তার মা, সেই সময়টাই আমাদের কাছে সব চেয়ে গর্বের মুহূর্ত ছিল। তবে আমাদের প্রচেষ্টা ছাড়াও ছিল হামসার সাহস ও আত্মবিশ্বাস। না হলে অন্ধকার ওই গুহায় ২২ ঘণ্টা কাটানো কি মুখের কথা?’