বিএনপির সিদ্ধান্তের পক্ষে ১২ দল

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
বিএনপির সিদ্ধান্তের পক্ষে ১২ দল

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের অপসারণ ইস্যুতে বিএনপির সিদ্ধান্ত অনুসরণ করবে ১২ দলীয় জোট। একই ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টিতে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ চায় গণ-অধিকার পরিষদ। গতকাল রবিবার জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকের পর এ অবস্থানের কথা জানিয়েছে জোট ও পরিষদ। বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, আরিফ সোহেল, উমামা ফাতেমা ও আবদুল হান্নান মাসউদ। জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে ছিলেন নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী, সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব।

গতকাল বিকালে রাজধানীর খিলক্ষেতে ১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) অফিসে বৈঠক শেষে জানতে চাইলে বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম আমাদের সময়কে বলেন, বৈঠকে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে মোঃ সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ ও প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক গঠন নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। আমরা বলেছি, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যে শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। এই অবস্থায় রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও নানা মহল সাংবিধানিক সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ

করেছে। এতে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা আরও ঘণীভূত হয়েছে। এটি দূর করতে হবে। আমরা আরও বলেছি, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের নিয়োগকৃত রাষ্ট্রপতির প্রতি আমাদের কোনো সহানুভূতি নেই। বিএনপি আমাদের প্রধান মিত্র, তাদের সিদ্ধান্তকেই আমরা অনুসরণ করব।

১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জোটপ্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, শাহাদাত হোসেন সেলিম, সৈয়দ এহ্সানুল হুদা, মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, মো. ফারুক রহমান, শামসুদ্দিন পারভেজ ও এএসএম শামীম।

সন্ধ্যায় নূরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ-অধিকার পরিষদের সঙ্গে পল্টনে তাদের কার্যালয়ে বৈঠক করেন জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৈঠক শেষে গণ-অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ বলেন, তিন ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে আমরা একমত। এই ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোরও ঐকমত্য প্রয়োজন। সেজন্য প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করতে পারেন। আমরা প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক কীভাবে গঠন করা যায়, তা নিয়েও কথা বলেছি। সেখানে আমরা একমত। এ ছাড়া ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪-এর নির্বাচন বাতিলে একমত হয়েছি।

গণ-অধিকার পরিষদের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতিমা তাসনিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, রবিউল ইসলাম, সহ আইন সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা প্রমুখ।

এর আগে গত শনিবার বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক হয়। জামায়াতের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বৈঠক করেন গত শুক্রবার। এসব বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিষয়ে নৈতিকভাবে একমত হওয়া। এ ছাড়া সংবিধান বাতিল ও প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ঘোষণার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

‘শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই’- রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের এমন বক্তব্যের পর তাকে অপসারণে আন্দোলনে নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন। সরকারও নানা তৎপরতা চালায়। কিন্তু এতে সাংবিধানিক সংকট হতে পারে- এমন আশঙ্কা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দলীয় অবস্থান ব্যক্ত করে বিএনপি। এরপরই জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিতে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেন।