নিলামে উঠছে এমপিদের আনা বিলাসবহুল গাড়ি

চট্টগ্রাম ব্যুরো
২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
নিলামে উঠছে এমপিদের আনা বিলাসবহুল গাড়ি

বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, রেঞ্জ রোভার, ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ- বিলাসবহুল সব গাড়ি। দেশের বাজারে প্রতিটি গাড়ির বর্তমান মূল্য ৮ কোটি থেকে ১২ কোটি টাকা। শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকায় কেবল কোটি টাকায় এসব গাড়ি আমদানির সুযোগ পান সংসদ সদস্যরা। সদ্য বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যরা এ সুযোগ হাতছাড়া করেননি। কিন্তু জাপান ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা ৪২টি বিলাসবহুল গাড়ি খালাসের আগেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটে, ভেঙে যায় সংসদ। ফলে এখন আর শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িগুলো নেওয়ার সুযোগ নেই। অর্থাৎ, এখন গাড়িপ্রতি শুধু শুল্কই দিতে হবে ৭ কোটি টাকারও বেশি। উপরন্তু হাসিনা সরকারের অধিকাংশ এমপি এখন আত্মগোপনে চলে গেছেন নতুবা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তাই গাড়িগুলো খালাস নেওয়া হচ্ছে না।

এদিকে বন্দরে অবতরণের ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না নিলে বিধি অনুযায়ী নিলামে ওঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই মধ্যে ২৪টি গাড়ি নিলামে তোলার ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগ। প্রক্রিয়া অনুযায়ী, এসব গাড়ি নিলামে তোলা হবে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে গাড়িগুলো শুল্ক পরিশোধ করে খালাস নেওয়ার সুযোগ রয়েছে আমদানিকারকের; ফলে দুই দফা চিঠি দিতে হবে। এরপরও খালাস না নিলে নিলাম ডাকা হবে।

জানা গেছে, এমপি কোটায় আসা গাড়িগুলো চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কারশেডে রয়েছে। গাড়িগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমদানিকারক ডেলিভারি না নেওয়ায় নিলামে তোলার জন্য কাস্টমসকে চিঠি দেওয়ায় নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয়। নিলামের আগে এরই মধ্যে গত সপ্তাহে প্রথম দফায় চিঠি পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক আমাদের সময়কে জানান, আমদানি করা যে কোনো পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না নিলে নিলামে তোলা হয়। এমপি কোটায় আসা গাড়িগুলো ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারকরা ডেলিভারি নেয়নি। তাই নিলামে তুলতে চট্টগ্রাম কাস্টমসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

নিলাম শাখার উপকমিশনার ও চট্টগ্রাম কাস্টমসের মুখপাত্র সাইদুল ইসলাম বলেন, ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারক যেসব গাড়ি খালাস নেয়নি, সেগুলোর একটি তালিকা বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে। তাই আমরা নিলামের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের এরই মধ্যে শুল্ক পরিশোধ করে খালাস নেবেন কিনা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছি। চাইলে তারা শুল্ক দিয়ে গাড়িগুলো খালাস নিতে পারবেন। তবে শুল্কমুক্ত সুবিধায় নেওয়ার সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম বন্দরের কারশেডে থাকা যে ২৪ এমপির গাড়ি নিলামে উঠছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন- চট্টগ্রাম-৪ সীতাকু- আসনের এসএম আল মামুন, চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার আবদুল মোতালেব, চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালীর মুজিবুর রহমান, সুনামগঞ্জ-১ রনজিত চন্দ্র সরকার, সংরক্ষিত নারী আসন-১৪ শাম্মী আহমেদ, জামালপুর-৫ আবুল কালাম আজাদ, পিরোজপুর-২ মহিউদ্দিন মহারাজ, ময়মনসিংহ-৭ এবিএম আনিসুজ্জামান, বগুড়া-৫ মোহাম্মদ মজিবুর রহমান প্রমুখ।