৭২ এর সংবিধান বাতিল ও রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক

ঢাবি প্রতিবেদক
২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:৫৫
শেয়ার :
৭২ এর সংবিধান বাতিল ও রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক

বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। বুধবার সন্ধ্যা ৭ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রঙ্গণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহŸায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।  

জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আমরা চাই না ৭২ এর বাকশালী পঁচা-গলা সংবিধান বাংলাদেশে বিরাজমান থাকুক। বাংলাদেশে যত সংকট সকল সংকটের মূলে ৭২ এর সংবিধান।

নাসীরুদ্দিন আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের যত রাজনৈতিক শক্তি আছে আমরা তাদেরকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছি। হাসিনা ফ্যাসিস্ট রেজিমের অংশ এখনো বিরাজমান। ফ্যাসিস্ট রেজিমের কোন অংশ বাংলাদেশে আমরা বিরাজমান দেখতে চাইনা। এই ফয়সালা রাজনৈতিক দলগুলোকে করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আহŸান করবো আপনারা বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য কোন হটকারী সিদ্ধান্ত নিবে না। হাসিনা ফ্যাসিস্ট রেজিমের অংশ চুপ্পুকে অপসারণের দাবিতে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন। রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন। সবাইকে কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে চুপ্পুর অপসারণ ও ৭২ এর সংবিধান বাতিলের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানাচ্ছি।  

তিনি আরও বলেন, আজকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে। আমরা দেখেছি তারা ফ্যাসিস্ট রেজিমের অংশগুলোকে রাখার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ফ্যাসিস্ট রেজিমের অংশ এখনো বঙ্গভবনের দেখতে পাচ্ছি। চুপ্পুর অপসারণ না হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের এক দফার দাবি ছিল ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থা বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল আমাদের এক দফার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে রাজপথে নেমে এসেছে। হাসিনার পতনে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জন হয়েছে। ৭২ এর সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে, ফ্যাসিস্ট সংঘবদ্ধ হয়েছে এবং এর প্রসার হয়েছে। হাসিনা সরকারকে পদত্যাগের কথা; তত্ত¡াবধায়ক সরকার ও নির্বাচনের কথা বললে সবসময় সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার দোহাই দিত। প্রধান উপদেষ্টার সাথে আলোচনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সাংবিধানিক দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে টিকিয়ে রাখতে চায়। তাদের কাছে আহŸান থাকবে ৭২ এর সংবিধান প্রশ্নে এবং আমাদের অভ্যুত্থান প্রশ্নে আপনাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। কারণ যারা গণভ্যুত্থানের পক্ষে ও এক দফায় একাত্মতা পোষণ করেছে, তারা ৭২ এর সংবিধান সমর্থন করতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, একাত্তর পরবর্তী সংবিধান আওয়ামী সংবিধান, বাকশালি সংবিধান। এই সংবিধানের আড়ালে মুজিবাদী আদর্শে বাংলাদেশ পরিচালিত হতো। চব্বিশের অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এই বাকশালি সংবিধান অপ্রাসঙ্গিক।

তিনি আরও বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে নতুন সংবিধান চাই যে সংবিধানে গণমানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন হবে, নতুন ফ্যাসিবাদের পথরুদ্ধ থাকবে। সংবিধান বাতিল হলে রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার প্রয়োজন হবে না। গণতন্ত্রকামী প্রত্যকটি রাজনৈতিক দলের ঐক্য চাচ্ছি, তবে মুজিববাদী ও জাতীয় পার্টির কোনো সংস্পর্শ থাকবে না৷ গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দলকে আহŸান করে বলতে চাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে ৫ দফা দেওয়া হয়েছে এই ৫ দফাই গণভ্যুত্থানকে বিপ্লবে রূপান্তর করার চূড়ান্ত দফা। ৫ দফার মধ্য দিয়ে গণভ্যুত্থান বিপ্লবে রূপান্তরিত হবে। বাংলাদেশ প্রশ্নে স্থায়ী সমাধানের দিকে যেতে পারব।