মধ্যরাতে ফেসবুকে সাদিয়ার নাটক, সমালোচনার মুখে আইডি নিষ্ক্রিয়
নাটক বা সিনেমার প্রচারণার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকেন তারকা শিল্পীরা। কখনও কখনও কিছু কৌশল আতঙ্কের জন্ম দেয়। আবার কিছু কৌশল হাস্যরসের খোরাক জোগায়। এসব প্রচারণা অনেক সময় দর্শকদের জন্য বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গতকাল সোমবার মধ্যরাতে জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান ফেসবুক লাইভে এসে এমনই একটি নাটকীয় কাণ্ড ঘটালেন; যা নিয়ে দর্শকমহলে চলছে তুমুল সমালোচনা।
মধ্যরাতে লাইভে এসে এক ভৌতিক ঘটনার বর্ণনা দেন অভিনেত্রী। তার কথা শুনে ভক্তরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কিন্তু পরে জানা যায়, পুরো ঘটনাটি ছিল সাজানো নাটক। এর আগে গায়ক তাহসান ও অভিনেত্রী ফারিনও একই ধরনের নাটকীয় প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে তারা একটি শপে আটকে পড়ার গল্প বলে দর্শকদের বোকা বানান।
ফেসবুক লাইভে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বেশ কিছুদিন ধরে একটা বাজে অভিজ্ঞতার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। আমি জানি না, এটা কেন হচ্ছে! তবে বিষয়টা কয়েকবার ঘটেছে দেখেই আজকে লাইভে এসেছি।’
এরপর ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে সাদিয়া বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে আমি একটা শুট শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম, তখন রাস্তায় যাওয়ার পথে দেখি পা থেকে মাথা পর্যন্ত একজন কালো কেউ আমার গাড়ির সামনে চলে আসে। এরপর গাড়ি থামিয়ে নেমে দেখি সেখানে কেউ নেই।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘এরপরে আমরা নিরাপদে সেখান থেকে বাসায় চলে আসি। তবে চলে আসার পরেও বাসার বিপরীত দিকে আবারও সেই ব্যক্তিকে দেখতে পাই।’
এ সময় একটু থেমে সাদিয়া বলেন, ‘আমি কথা বলতে কাঁপছি। কিছুক্ষণ আগেও বারান্দা থেকে দেখেছি সেই ব্যক্তি আমার বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছে।’
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
এরপর মোবাইলটা হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে যান এই অভিনেত্রী। সেখানে গিয়ে লাইভে কালো পোশাকে দাঁড়িয়ে থাকা সেই ব্যক্তিকে দেখান সাদিয়া। পুরোটা সময় জুড়ে অভিনেত্রীর চেহারায় ছিল আতঙ্কের ছাপ। রীতিমতো কান্না করতে শুরু করেন। বাড়িতে তিনি বাদে আর কেউ নেই উল্লেখ করে সাদিয়া বলেন, ‘দেখুন আপনারা, ওই ব্যক্তি নিচে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িতে আমি বাদে এখন কেউ নেই…’ বলেই কাঁদতে থাকেন তিনি।
একপর্যায়ে বারান্দার দরজা লাগিয়ে রুমে চলে আসেন সাদিয়া আয়মান। এ সময়ও তার ফেসবুক লাইভটি চলছিল। লাইভ চলাকালীন অবস্থায় হঠাৎই আঁতকে ওঠেন অভিনেত্রী। একপর্যায়ে ‘ও মাই গড’, ‘ও মাই গড’ বলতে বলতে লাইভটি কেটে দেন তিনি।
এরপরই সাদিয়া আয়মানের কী হয়েছে? তিনি কি কোনো বিপদে পড়েছেন? এমন নানা উদ্বেগে ফেসবুকজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভক্তরা অভিনেত্রীকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে একের পর এক পোস্ট দিতে শুরু করেন। সকলেই ধারণা করে নেন, সাদিয়ার সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটেছে।
তবে এর কিছুক্ষণ পরই ফেসবুক থেকে লাইভটি সরিয়ে নেন সাদিয়া আয়মান। ঘণ্টাখানেক বাদে একটি ওয়েব ফিল্মের পোস্টার শেয়ার করেন তিনি। ভক্তরাও বুঝে নেন, পুরো ঘটনাই ছিল ওয়েব সিনেমার প্রচারণার অংশ মাত্র। এরপরই শুরু হয় সমালোচনা।
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
অভিনেত্রীর এক ভক্ত লিখেছেন, ‘মায়াবী চেহারার মানুষটা মাঝরাতে এই নাটকটা কীভাবে করতে পারল! হতাশ হলাম এ রকম সস্তা প্রচারণায়। যেদিন সত্যি কালো মানুষটা আসবে সেদিন কি এমন লাইভ করতে পারবেন?’
অন্য একজন লিখেছেন, ‘আপনার কি কমনসেন্সের অভাব? আপনি যদি কাজের প্রমোশন করবেন তাহলে লাইভ শেষে বলতে পারতেন এটা। না বলে হুট করে কেটে দিলেন। মাঝ রাতে জাতির ইমোশন নিয়ে খেলার কি দরকার ছিল।’
আরেক জনের কথায়, ‘মানুষ কাকে বিশ্বাস করবে? সাদিয়া আয়মানের মতো বড় অভিনেত্রী এত বড় প্রতারণা ধোঁকা দিল। আর আপনারা এত রাতে তার লাইভ দেখে আবার আতঙ্কে তার জন্য চিন্তিত হচ্ছিলেন? হায়রে মাইয়া মানুষ, এই আপনাদের অভিনেত্রী একেই বলে সত্যিকারের অভিনেত্রী ফালতু যত্তসব।’
প্রচারণায় এমন কৌশল অবলম্বন করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পেয়েছেন সাদিয়া আয়মান। আর সেকারণে ফেসবুক আইডিও ডিএক্টিভেট করে রেখেছেন।
এদিকে, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দীপ্ত প্লে’র একটি ওয়েব সিনেমার কাজ করেছেন সাদিয়া। ‘বিভাবরী’ শিরোনামের সেই কাজটি শিগগিরই আসছে প্রচারে। যেটি মূলত ঢাকার রহস্যজনক কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সেই ওয়েব সিনেমার প্রচারণার কৌশল হিসেবেই সাদিয়ার এই ‘ফেসবুক লাইভ’ নাটক।
আরও পড়ুন:
‘এভাবে বিয়ে করা নাকি অর্থহীন’
অন্যদিকে, ‘বিভাবরী’র পোস্টার শেয়ার করে দীপ্ত প্লে লিখেছে, ‘ঢাকার আনাচে-কানাচে যাদের দেখা যাচ্ছে, যাদের ভয়ে আমি আপনি অনেকেই ভীত, তাদের দেখা যাবে খুব দ্রুত… দীপ্ত প্লে অরিজিনাল ফিল্ম “বিভাবরী”তে। আসছে “বিভাবরী” অনেক ভয় আর অন্যরকম গল্প নিয়ে।’