পিকনিকে এসে মেঘনা নদীতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
চাঁদপুরের মতলব উত্তর মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে পিকনিকে এসে মেঘনা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজের দুই দিন পর এক ছাত্রর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার আমিরাবাদ মেঘনা নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ওই ছাত্রের নাম মো. আবির (১০)। সে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার বাঘবের এলাকার জজ মিয়ার ছেলে এবং ভক্তবাড়ী বাজারস্থ আল আকসা রেসিডেন্সিয়াল মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে ছাত্র ছিল।
মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে (মেঘনা নদী) পিকনিকে আসে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ আল আকসা রেসিডেন্সিয়াল মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। সেখনে নদীর পানিতে গোসল করতে নেমে ডুবে যায় মাদ্রাসাছাত্র মো. আবির। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
তিনি জানান, শনিবার সকালে উপজেলার আমিরাবাদ মেঘনা নদীতে নিখোঁজ মো. আবিরের মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তারা মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। নিহতের বড় চাচা মো. ফজলুর হকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত বছরও নারায়ণগঞ্জ ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর একই স্থানে ডুবে মৃত্যু হয়। কিন্তু পর্যটন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কোনো সতর্কতা অবলম্বন করেনি। সাঁতার না জানা শিশুদের নামতে দেওয়া কোনভাবে ঠিক হচ্ছে না। এখানে এই ধরণের ঘটনা ঘটলে গনমাধ্যমকেও জানানো হয় না।
নিহত মো. আবিরের চাচা ফজলুল হক বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজা তার মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে পিকনিকে আসেন। পাশে মেঘনা নদীর তীরে সহপাঠিদের সাথে আনন্দ উদযাপন করার সময় মেঘনা নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। পরে মোহনপুর নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরিদলকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে চলে যায়। দুই দিন পর আমিরাবাদ এলাকার মেঘনা নদীতে আমার ভাতিজার মরদেহ ভেসে ওঠে। পরে সেখান থেকে আমার ভাতিজার মরদেহ আমরা বাড়িতে নিয়ে আসি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে কোনো নিরাপত্তা নাই, নিরাপত্তা ছাড়া তারা কিভাবে একটা পর্যটন কেন্দ্র চালু করে। আমার ভাতিজা নিখোঁজ হওয়ার পর ওই পর্যটন কেন্দ্রের কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেননি।’
এ বিষয়ে মোহনপুর পর্যটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমানের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।