রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ
আর কয়েক ঘণ্টা পর ২২ দিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ। এ কারণে চাঁদপুরের মাছঘাটে অন্যদিনের তুলনায় বেড়েছে ক্রেতা সমাগম। আর সেই সুযোগেই বিক্রেতারাও হাঁকাচ্ছেন ইলিশের আকাশছোঁয়া দাম। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করছেন তারা।
অপরদিকে ক্রেতারা বলছেন, ইলিশের এমন ভরা মৌসুমে কখনও এত দাম দিয়ে ইলিশ কিনেননি। এবার মনে হচ্ছে রেকর্ড দামে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ইলিশ।
আজ শুক্রবার চাঁদপুর শহরের বড়স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের চেয়ে ক্রেতা বেশি। এদের বেশির ভাগই খুচরা ক্রেতা। তাদের লাইন ধরে ইলিশ কিনতে দেখা যায়। এসব ক্রেতা চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী রামগঞ্জ, কুমিল্লা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে চাঁদপুরে ইলিশ কিনতে এসেছেন। আর এসব ক্রেতার আগমনেই সরগরম হয়ে উঠেছে মাছঘাট। কিন্তু ইলিশের আকাশছোঁয়া দামে যেন তারা অনেকটাই বিব্রত।
আলাপকালে ঢাকার শনিরআখড়া থেকে আসা ক্রেতা মুক্তা বেগম বলেন, একসময় চাঁদপুরেই থাকতাম। তখন ঘাটে প্রায়ই আসতাম। সুযোগ বুঝে কিনে নিতাম। এখন ঢাকায় থাকি। শুনেছি রবিবার থেকে ইলিশ পাব না, তাই মেয়ের কারণে ইলিশ কিনতে আসলাম। কিন্তু দামতো অনেক। তাই ঘুরছি দেখি কিনতে পারি কিনা।
হাজীগঞ্জের আরেক ক্রেতা আওলাদ হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগে যেই ইলিশ ২ হাজার টাকা কেজি ছিল, এখন তা ৩ হাজার টাকা। এরপরও ৮/৯শ গ্রামের কিছু ইলিশ আমি ১৯০০ টাকা কেজি দরে কিনেছি। তবে ইলিশের আমদানী কম হলেও ক্রেতা বেশি হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে মাছঘাটের ব্যবসায়ীরা জানায়, এ বছর ইলিশের আমদানী নাই বললেই চলে। প্রতিদিন মাত্র ২ থেকে ৩শ মণ ইলিশ মাছ ঘাটে আসে। যা আমাদের চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তারা বলেন, গতকাল শুক্রবারও আড়াই থেকে ৩শ মণ ইলিশ ঘাটে বেচাকেনা হয়। তবে এসব মাছের বেশির ভাগই ভোলা, ররিশাল, নোয়াখালী ও হাতিয়ার ইলিশ। দাম প্রসঙ্গে তারা বলেন, সরবরাহ কম হওয়ায় জেলে এবং আড়তদারদের খরচও ওঠেনা। তাইতো দামও কমছে না।
সূত্র মতে, ১০০০ থেকে ১২০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকা কেজি, ৮/৯শ গ্রাম সাইজের ইলিশ ১৯০০ থেকে ২০০০ টাকা, ৬/৭শ গ্রামের ইলিশ ১৫/১৬শ টাকা ও ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১২/১৩শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। যদিও ৮/১০ দিন আগেও এসব ইলিশ ৪০০/৫০০ টাকা করে কম ছিল।
মাছঘাটের পাইকারী ও খুচরা ইলিশ বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহ আগেও ইলিশের দাম কিছুটা কম ছিল। তবে মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যাবে শুনে ক্রেতার সংখা বেড়েছে। এছাড়াও ইলিশের আমদানিও কম। এসব নানাবিধ কারণে ইলিশের দাম বেড়েছে।
চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবে বরাত বলেন, আমাদের চাঁদপুরের ইলিশ একেবারেই কম। তবে যা আসে বেশির ভাগই হাতিয়া, নোয়াখালী, রামগতি ও আলেকজেন্ডারসহ নামার ইলিশ। যদিও সাইজ অনুসারে দাম কম বেশি হয়। তবে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি।