ময়মনসিংহে আরও ৫০ গ্রাম প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৫৫
শেয়ার :
ময়মনসিংহে আরও ৫০ গ্রাম প্লাবিত

অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও ৫০টি গ্রাম। বর্তমানে তিন উপজেলার ২৩টি ইউনিয়নের দেড় লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছে। খাদ্য সংকটে দুর্গত এলাকার মানুষ। 

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন জানান, বন্যা কবলিত উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে নারী ও শিশুসহ দুই সহস্রাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তিন উপজেলায় ৬৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের পাশাপাশি রান্না করা খাবারও দেওয়া হচ্ছে।

ধোবাউড়া উপজেলার ঘোষগাঁও, দক্ষিণ মাইজপাড়া, গামারীতলা, বাঘবেড়সহ সাতটি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে ঘোষগাঁও ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামে নেতাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জমির ফসল ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানিবন্দি মানুষ গৃহপালিত গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ধোবাউড়া উপজেলার উত্তরাঞ্চলে পানি কিছুটা কমলেও গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে পানি বেড়েছে। ২৬টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা সদর থেকে কলসিন্দুর পাকা রাস্তা, ঘোষগাঁও ধোবাউড়া পাকা রাস্তা, ঘোষগাঁও বালিগাঁও পাকা রাস্তা, মুন্সিরহাট বাজার থেকে শালকোনা পাকা রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারদিনের টানা দুর্ভোগে দিশেহারা মানুষ।

হালুয়াঘাট উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় হালুয়াঘাটের পাঁচটি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। উজানের পানি কমে যাওয়ায় ভূবনকুড়া, জুগলী, গাজিরভিটা, সদর ও পৌরসভার পানি নেমে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহমেদ জানান, উপজেলার উজান দিকে প্লাবিত হওয়া গ্রামের পানি নামতে শুরু করেছে। নড়াইল, কৈচাপুর, ধুরাইল এবং আমতৈল ইউনিয়নের পানি ফুলপুর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হলেও সার্বিক পরিস্থিতি এখন ভালো।

ফুলপুর উপজেলায় প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফুলপুর উপজেলার ছনধরা, সিংহেশ্বর ও ফুলপুর ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ১০টি গ্রাম। এছাড়া ফুলপুর সদর, রূপসী, বালিয়া, বওলা, ভাইটকান্দি ও রামভদ্রপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জমির আমন ফসল ও সবজি নষ্ট হয়েছে। পুকুর ও খামারের মাছ ভেসে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম আরিফুল ইসলাম জানান, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

ফুলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, বন্যায় আমন ধানের চার হাজার ৪৪০ হেক্টর জমি নিমজ্জিত হয়েছে এবং ১৪৫ হেক্টর সবজি ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে।ছে।